রাজধানীর শেরাটন ঢাকার বলরুমে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলা গানের প্রাণ’ শীর্ষক সংগীতানুষ্ঠান। সেখানে মঞ্চে উঠে কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা যখন গাইতে শুরু করেন ‘শিল্পী আমি তোমাদেরই গান শোনাব’, তখন পুরো মিলনায়তন জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এক অনন্য আবেশ। গানের তালে তালে শ্রোতারা হাততালি দিয়ে ভাসিয়ে দেন শিল্পীকে।
উপস্থিত দর্শকদের ভিড়ের মধ্যেই ছিলেন অভিনেত্রী মাসুমা রহমান নাবিলা।
রুনা লায়লার লাইভ পরিবেশনা শুনে তিনি যেমন মুগ্ধ হয়েছেন, তেমনি আবেগে ভেসে গেছেন শৈশবের স্মৃতিতে। গানের শক্তি ও কণ্ঠের বিস্তৃতি যে আজও অটুট—তা নতুন করে অনুভব করেছেন তিনি।
অনুষ্ঠান শেষে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে নাবিলা লেখেন, ‘বাংলাদেশি হিসেবে আমরা গর্ব অনুভব করি, কারণ আমাদের একজন রুনা লায়লা আছেন। গতকাল (গত শুক্রবার) তাকে লাইভ গাইতে শুনে বুঝলাম, তার কণ্ঠে এখনো কী অসাধারণ শক্তি ও ব্যাপ্তি রয়েছে।
আল্লাহ যেন তাকে দীর্ঘ ও সুস্থ জীবন দান করেন।’
রুনা লায়লার গান শুনতে শুনতেই নাবিলা ফিরে যান শৈশবের দিনগুলোতে—যখন পরিবারের সঙ্গে সৌদি আরবে বসবাস করতেন। সেই সময় বিনোদনের তেমন সুযোগ না থাকলেও, বাংলা গান ছিল তাঁদের পরিবারের নিত্যসঙ্গী।
নাবিলা লেখেন, ‘সৌদিতে থাকার সময় বিটিভি থেকে রেকর্ড করা রুনা লায়লার গানের অনুষ্ঠানের ভিডিও ক্যাসেটই ছিল আমাদের পরিবারের নিয়মিত বিনোদন।
তখন মাত্র তিন-চার বছরের শিশু নাবিলা। ছোটবেলা থেকেই রুনা লায়লার গান শুনতে শুনতে বড় হয়েছেন তিনি। ধীরে ধীরে তার প্রিয় গানের তালিকায় জায়গা করে নেয় ‘শিল্পী আমি শিল্পী’ ও ‘বন্ধু তিন দিন’। এর মধ্যে ‘বন্ধু তিন দিন’ গানটি ছিল সবচেয়ে প্রিয়।
এই গান ঘিরে এক মজার ও আবেগঘন স্মৃতির কথাও তুলে ধরেছেন নাবিলা।
তিনি লেখেন, “একবার এক আত্মীয়ের বাসায় ভিসিআরে ‘বন্ধু তিন দিন’ গানটি কয় হাজার বার যে শুনছিলাম আর নাচছিলাম। অনেকক্ষণ ধরে গান চলার কারণে ভিসিআর গরম হয়ে যায়। আন্টি বাধ্য হয়ে ভিসিআর বন্ধ করে দেন। তারপর ‘বন্ধু তিন দিন’ শুনতে পারছিলাম না—তারপর আমার সে কী কান্না, ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদেছিলাম। সেই কান্নার কথা এখনো মনে আছে।”
শৈশবের সেই স্মৃতির কথা তুলে ধরে নাবিলা আরো লেখেন, রুনা লায়লাকে যখনই তিনি দেখেন বা তাঁর গান শোনেন, চোখের সামনে ভেসে ওঠে ছোটবেলার সেই দিনগুলো—নিষ্পাপ আবেগ, গান আর ভালোবাসায় ভরা সময়।
কিংবদন্তি শিল্পীর কণ্ঠ যে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে ছুঁয়ে গেছে, নাবিলার এই স্মৃতিই যেন তার জীবন্ত প্রমাণ।
এসএন