কুষ্টিয়ার মিরপুরে শীতার্তদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (৪৭ বিজিবি) কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে এই শীত বস্ত্র বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, কুষ্টিয়া বিজিবি ৪৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনি।
এসময় কুষ্টিয়া বিজিবি ৪৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনি বলেন, বিজিরি প্রধান কাজ হচ্ছে সীমান্তকে রক্ষা করা। চোরাচালান সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা। এর পাশাপাশি সবসময় দোস্ত মানুষদের পাশে থাকার চেষ্টা করি। সীমান্ত পাহারা দেয়ার জন্য আমাদের ট্রহল কার্যক্রম আশেপাশের রাস্তায় বৃদ্ধি করেছে। এছাড়া আমরা বিভিন্ন রকম পয়েন্টে চেকপোস্ট বসে আছি। যে গাড়িগুলোকে আমাদের সন্দেহ হয় সেই গাড়িগুলোকে আমরা চেক করি। আমরা মোটামুটি নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি কোন অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশের প্রবেশ করতে পারবে না কোনো দুষ্কৃতিকারী আমাদের বাংলাদেশ ত্যাগ করে বের হতে পারবে না। আমরা তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হব। আমাদের কাছে যে ইনফরমেশন আছে, এই সীমান্ত দিয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো দুষ্কৃতিকারী পাশের দেশে পালিয়ে যেতে পারেনি। আমরা সেজন্য সতর্ক অবস্থায় আছি। এখনো পর্যন্ত আমাদের কোনো ইনফরমেশন নেই।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা অস্ত্র এবং অন্যান্য চোরাচালানের বিষয়ে বিশেষ সতর্ক অবস্থায় আছি। কুষ্টিয়ার সীমান্ত দিয়ে অথবা মেহেরপুরের গাংনী সীমান্ত দিয়ে খুব বেশী অস্ত্র এসেছে সে রকমও না। এখানে আমরা আনুমানিক ২৫টিরও বেশি অস্ত্র উদ্ধার করেছি। অস্ত্রের বিষয়ে আমরা সব সময় জিরো টলারেন্সে আছি এবং থাকবে। চলতি বছরে আমরা ১১০ কোটির মত সমপরিমাণ চোরাচালান ও মাদক উদ্ধার করেছি। এছাড়া আমরা আনুমানিক ২৫টির মতো অস্ত্র উদ্ধার করেছি। আপনাদের কাছ থেকে আমরা যতটুকু শুনি বাস্তবতায় আমরা ততটুকু দেখছি না। যেহেতু আপনারা বলেছেন সীমান্তে মানুষদের সহযোগিতায় এই ব্যাপারে বিশেষ সতর্ক আছি। রেগুলার গণ সংযোগের ব্যবস্থা বাড়িয়েছি। যাতে সীমান্তের মানুষ আমাদের সহযোগিতা করে এবং সীমান্ত রিলেটেড যেকোনো সমস্যা আমরা দমন করব।
তিনি আরও বলেন, এর দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক সম্পন্ন প্রফেশনাল। আমাদের কোনো তথ্য থাকলে আমরা পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে সেসব সমাধান করার কার্যক্রম চালু রেখেছি। আমাদের পক্ষ থেকে এখনো আমরা দেখিনি যে তারা সীমান্তে অস্থির কিছু করার চেষ্টা করছে।
সম্প্রতি ৫ ডিসেম্বর সীমান্তে হত্যার বিষয়ে তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডটি সীমান্তে হয়নি। এই হত্যাকাণ্ডটি হয়েছে ভারতের অভ্যন্তরে। যাকে হত্যা করা হয়েছে বা যাকে বিএসএফ কর্তৃক গুলি করা হয়েছে শান্ত নামের ছেলেটা আসলে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছিল। অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং তারই পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বক্তব্য অনুযায়ী শান্ত চোরাকারবারি ছিল। সে সেখানে যেয়ে বিএসএফকে আক্রমণ করার চেষ্টা করেছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে আত্মরক্ষার্থে তারা গুলি করেছিল। এটা সীমান্তে হয়নি। হয়েছে ভারতের অভ্যন্তরে। আমাদের কুষ্টিয়া মেহেরপুর এই সীমান্তে সীমান্ত হত্যার বিষয়ে আপনারা যেভাবে সীমান্ত হত্যার কথা বলেন বিষয়টা আমি দ্বিমত পোষণ করছি। এখানে কোনো উদ্বেগের কারণ নেই। আমাদের সীমান্ত এলাকায় মানুষদের যথেষ্ট পরিমাণে মটিভেট করার চেষ্টা করছি। যাতে এই ধরনের কার্যক্রমে তারা লিপ্ত না হয়। এই ধরনের কার্যক্রম কেউ যদি করার চেষ্টা করে থাকে তার সম্পর্কে যাতে আমরা অগ্রিম ইনফরমেশন পায় আগে থেকেই আমরা তাকে থামিয়ে দিতে পারবো। সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি বিজিবি সব সময় সামাজিক কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রেখে চলেছে।
এসময় কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক জাকিরুল ইসলামসহ বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এবি/টিকে