ভাসমান জীবনযাপন করেন মো. আবুল মুনসুর ফকির। মানুষের দানেই চলে তার জীবন-জীবিকা। তবুও স্বপ্ন দেখেন জনপ্রতিনিধি হয়ে মানুষের সেবা করার। এই ইচ্ছা তার দীর্ঘদিনের। এর আগে বিভিন্ন সময় চেষ্টা করেও সফল হননি। তবে এবারই প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসন থেকে সংসদ সদস্য (এমপি) পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।
মনোনয়নপত্রে তিনি নিজের পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন ‘ভিক্ষুক’। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) ময়মনসিংহের ত্রিশালে ৯ জন সম্ভাব্য প্রার্থী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন মো. আবুল মুনসুর ফকির। যাচাই-বাছাইয়ে সব ঠিক থাকলে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনের একজন প্রার্থী হতে পারেন তিনি।
মুনসুর ফকির ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের বড় পুকুরপাড় এলাকার বাসিন্দা। এবারই প্রথম তিনি কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হননি। এর আগেও তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি পদপ্রার্থী হিসেবে এলাকায় প্রচার চালিয়েছেন। এলাকাবাসী জানান, সর্বশেষ ২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে উপজেলার বৈলর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন মুনসুর। নির্বাচনী প্রচারে তিনি ভোর থেকে রাত অবধি পাড়া-মহল্লা ও হাট-বাজারে একাই পোস্টার সাঁটানোর পাশাপাশি জনগণের কাছে ভোট চাইতেন। অনেকে বিষয়টিকে ‘পাগলামি’ বললেও, কেউ কেউ নির্বাচনে টাকার ছড়াছড়ি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ হিসেবে দেখে তাকে উৎসাহ দিয়েছেন।
ওই ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩৭৭ ভোট পেয়েছিলেন মুনসুর ফকির। সাধারণ মানুষ তার এই ভোটপ্রাপ্তিকে জনপ্রতিনিধিদের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘প্রতিবাদী রায়’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন।
এমপি প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে জানতে রাতে মুনসুর ফকিরের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তাজুল রায়হান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সব প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
ইউটি/টিএ