মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার আশঙ্কার মধ্যে মুদ্রা হিসেবে ইউরো চালু করতে যাচ্ছে বুলগেরিয়া। আজ বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) দেশটিতে লেভের পরিবর্তে চালু হবে ইউরো। এর মধ্যদিয়ে ইউরোজোন বা সেনজেন মুদ্রা অঞ্চলের ২১তম সদস্য হতে যাচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের দেশটি। এর আগে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি ২০তম দেশ হিসেবে ইউরো মুদ্রা গ্রহণ করে ক্রোয়েশিয়া।
বুলগেরিয়ায় ১৯ শতকের শেষ দিকে (১৮৮১ সালে) মুদ্রা হিসেবে লেভের ব্যবহার শুরু হয়। প্রায় দেড় শতাব্দীর পর আজ আনুষ্ঠানিকভাবে এই লেভের জায়গায় ইউরো মুদ্রা চালু হতে যাচ্ছে। দেশটি ২০০৭ সাল থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হয়। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ইউরোজোনে প্রবেশের মানদণ্ড পূরণ করে।
এই পদক্ষেপের ফলে মুদ্রা হিসেবে ইউরো ব্যবহারকারী ইউরোপীয়দের সংখ্যা বেড়ে ৩৫ কোটি ৬০ লক্ষে উন্নীত হবে এবং চলমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা সত্ত্বেও ভৌগোলিকভাবে প্রথমবারের মতো কৃষ্ণসাগর অঞ্চলে একক মুদ্রা হিসেবে প্রসার ঘটবে।
৬৪ লাখ জনসংখ্যার দেশ বুলগেরিয়ার একাধিক সরকার ইউরো মুদ্রায় চালুর পক্ষে সমর্থন জানিয়ে আসছে। তাদের আশা, এটা তাদের দুর্বল অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে, পশ্চিমাদের সাথে সম্পর্ক জোরদার করবে এবং রাশিয়ার প্রভাব থেকে রক্ষা করবে। তবে কেউ কেউ এই পদক্ষেপে উদ্বেগ জানিয়ে বলেছেন, ইউরো গ্রহণের ফলে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিতে পারে।
ইইউর সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হিসেবে বিবেচিত বুলগেরিয়া বর্তমানে নানা চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। যার মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভ, যার ফলে সম্প্রতি একটি রক্ষণশীল নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে এবং দেশটিতে পাঁচ বছরের মধ্যে অষ্টমবারের মতো জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী রোসেন জেলিয়াজকভ গতকাল মঙ্গলবার বলেছেন, তিনি মনে করেন তার মন্ত্রিসভা একটি মাইলফলক অর্জন করেছে। তিনি বলেন, ‘বুলগেরিয়া বছর শেষ করছে ১১৩ বিলিয়ন ইউরো (প্রায় ১৩৩ বিলিয়ন ডলার) মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) এবং তিন শতাংশেরও বেশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে, যা আমাদের ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ পাঁচটি দেশের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কৃষ্ণসাগর উপকূলবর্তী দেশটির প্রায় ৩.৬ শতাংশের কাছাকাছি মুদ্রাস্ফীতি, যা, ‘বাড়তি ক্রয়ক্ষমতা’ এবং কম দুর্নীতিগ্রস্ত অর্থনীতির সাথে সম্পর্কিত এবং এটি ইউরোর প্রবর্তনের সাথে কোনোভাবে সম্পর্কিত নয়।’
কেএন/টিএ