ভারত থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসছে রোহিঙ্গারা

মিয়ানমারে প্রত্যর্পণের ভয়ে এবং পরিচয়পত্র হয়রানির জন্য শত শত রোহিঙ্গা মুসলিম পরিবার ভারত থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছেন। গত কয়েক মাসে অন্তত দুই হাজার রোহিঙ্গা দেশটি থেকে বাংলাদেশে চলে এসেছেন।

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নেতারা বলেন, গত বছরের অক্টোবরে সাত রোহিঙ্গাকে ভারত থেকে স্বদেশে ফেরত পাঠানোর পরই তারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে শুরু করেছেন। ধরপাকড়ের ভয়ে আরও অনেক রোহিঙ্গা পালিয়ে যেতে প্রস্তুতি নিয়েছেন।

ভারতীয় উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকার রোহিঙ্গাদের অবৈধ বিদেশি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে। দেশটিতে আশ্রয় নিয়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ও বস্তিতে বসবাস করা রোহিঙ্গাদের শনাক্ত করে প্রত্যাবাসনের নির্দেশ দিয়েছে। চলতি মাসে ভারত পাঁচ সদস্যের এক রোহিঙ্গা পরিবারকে ফেরত পাঠিয়েছে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে। গত তিন মাসের মধ্যে এটি দ্বিতীয় প্রত্যাবাসন।

এতে পৃথিবীর সবচেয়ে নিপীড়িত এ জনগোষ্ঠীর মধ্যে হতাশা কাজ করছে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে বছরের পর বছর নিপীড়ন ও সহিংসতার শিকার হয়ে পালিয়ে আসার পর সেখানে ফিরে যাওয়ার পরিবেশ সহায়ক নয় বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

উত্তর ভারতীয় শহর জম্মুতে ছয় বছর কাটানোর অক্টোবরে বাংলাদেশের উদ্দেশে ভারত ছাড়েন মোহাম্মদ আরাফাত নামের এক রোহিঙ্গা। তিনি জানান, জম্মু চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির রোহিঙ্গাদের শনাক্ত ও হত্যা আন্দোলনের আহ্বান করা হয়েছে। আমরা নিজ দেশে ভয়ংকর জীবন নাশের হুমকির মধ্যে আছি। অন্যত্র বসবাস করতে আমাদের স্বাধীনতা দরকার। গত কয়েক মাসে আরাফাতসহ প্রায় দুই হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।

বাংলাদেশে জাতিসংঘের শরণার্থী-বিষয়ক হাইকমিশনার বৃহস্পতিবার বলেন, ভারত থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা নিরাপদ ও সুস্থ আছেন। তাদের সাহায্য দেয়া হচ্ছে।

ইউএনএইচসিআর মুখপাত্র ফিরাস আল খাতিব বলেন, মিয়ানমার থেকে খুবই স্বল্পসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসছেন। চলতি মাসে অধিকাংশ রোহিঙ্গা ভারত থেকে এসেছে। তাদের মধ্যে কেবল ১৬ হাজার রোহিঙ্গার কাছে ইউএনএইচসিআরের পরিচয়পত্র আছে।জাতিসংঘের শরণার্থী কার্ড তাদের হয়রানি, নির্বিচার গ্রেফতার, আটক ও প্রত্যাবাসন থেকে সুরক্ষা দিতে পারবে। ভারত সরকার রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে সহনশীল নয়।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টের শেষ দিকে মায়ানমার সেনাবাহিনীর তুমুল হত্যাযজ্ঞ, জাতিগত নিধন অভিযান শুরু হওয়ার পর সাড়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।

টাইমস/এসআর/ কেআরএস

Share this news on: