সম্প্রতি আমি যখন আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হাঁটছিলাম, তখন স্ট্যান্ডার্ড ফেস মাস্ক পরিহিত একজন মহিলা রাস্তার উল্টো দিক থেকে আমাদের দিকে হেঁটে আসছিলেন। আমাদের কাছাকাছি আসতেই মহিলাটি লাফ দিয়ে রাস্তার কার্নিশ ঘেঁষে দাঁড়াল। তিনি আমাদের দিকে আঙ্গুল তাক করে দৃঢ়তার সাথে ভদ্র ভাবে বললেন আমরা যেন তার থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখি।
আমরা মাস্ক পরিহিত ছিলাম না। সেই অর্থে পার্কে তাকে ছাড়া আর তেমন কাউকে আমরা মাস্ক পড়তেও দেখিনি। যেহেতু হঠাৎ অপরিচিত কাউকে রাস্তায় ক্রশ করলে কোভিড-১৯ সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি তুলনামূলক ভাবে কম তাই আমরা এই গরমের মধ্যে মাস্ক পড়ার ঝামেলায় যায়নি।
আমরা যে অসচেতন, ব্যাপারটা সেরকম নয়। তাছাড়া জর্জিয়ার যে অঞ্চলে আমরা থাকি সেখানে বাইরে বেরোলে মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক নয়। তবে নীতিগতভাবে বলতে গেলে, মাস্ক পরিহিতা সেই মহিলাই সঠিক ছিল। তবে আমরা যখন তার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলাম তখন কথা বলতে তাকে যথেষ্ট সাহস সঞ্চয় করতে হয়েছে।
আমরা জানতাম যে সে সঠিক। এ কারণে আমরা দ্রুত ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি এবং রাস্তা থেকে সরে এসেছি। যাতে করে সে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে আমাদেরকে এড়িয়ে এগিয়ে যেতে পারে। তবে তিনি আমাদেরকে তার অনুরোধ মানতে জোর জবরদস্তি করেছেন তেমনটাও নয়।
অনেক সময় এমনকি মানুষের অসচেতন আচরণের জন্যেও আমরা আমাদের নেতাদের দিক-নির্দেশনার অভাব এবং স্বার্থান্বেষী স্বভাবকে দায়ী করি। তবে আমাদেরও একটা দায়িত্ব আছে। আমরা স্বতন্ত্রভাবে কী করছি বা করছি না, তা এই মহামারীকে আরও মারাত্মক করে তুলতে পারে এবং আমাদের জীবনে এর প্রভাব দীর্ঘায়িত করতে পারে।
নিজেকে ১৮ শতকের দার্শনিক ইমানুয়েল ক্যান্টের কর্তৃক উত্থাপিত একটি নৈতিক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার চেষ্টা করুন- সবাই যদি আপনার মতো আচরণ করে তাহলে এর ফলাফল কী হবে? ক্যান্ট যুক্তি দিয়েছিলেন যে, আমরা নৈতিকভাবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে এমন সব কাজ করতে বাধ্য যা অন্য সবার করা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।
আমরা যদি সকলেই এই মাস্ক পরিহিতা মহিলার মতো সাহস সঞ্চয় করতে পারি। শুধুমাত্র নিজে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন না করে অন্যকেও এটি করার কথা স্মরণ করিয়ে দিই এবং যদি আমরা এটি মন থেকে করতে পারি, তবে এই মহামারীতে মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটাই কমে যাবে।
মূল লেখা: ডেভিড জি অ্যালান (ইডিটরিয়াল ডিরেক্টর, সিএনএন ট্রাভেল, স্টাইল, সাইন্স এণ্ড ওয়েলনেস)।
তথ্যসূত্র: সিএনএন
টাইমস/এনজে