মহামারির এই সময়ে ভ্রমণ করা কি নিরাপদ?

দীর্ঘদিন ধরে ঘরে আটকে থাকা বা সামাজিক বিচ্ছিন্নতার ফলে অনেকের মধ্যে একধরণের একঘেয়েমি ও বিষণ্ণতা তৈরি হয়েছে। ফলে সাপ্তাহিক ছুটি বা অন্য যেকোনো অবসরে মানুষ এখন পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে আনন্দ ভ্রমণে বের হচ্ছে। যদিও অন্যান্য বছরেও শীতকালে বাংলাদেশে ভ্রমণের মাত্রা কিছুটা বেড়ে যায়।

কিন্তু এ বছর কোভিড-১৯ মহামারির কারণে পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা। প্রাণঘাতী এই ব্যাধির সংক্রমণ আমাদের ভ্রমণের সব পরিকল্পনা বদলে দিয়েছে। তার ওপর আবার আসছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ।

স্বাস্থ্য গবেষকরা বলছেন, মাস্ক ব্যবহার, বারবার হাত ধুয়া ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো সতর্কতা ভ্রমণকারীদের অবশ্যই পালন করা উচিত।

এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ ড. কেইথ আর্মিটেজ বলেন, ‘বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যদি সবাই মাস্ক পরিধান করে তাহলে ৩ ঘণ্টার কম সময়ের দূরত্বে ভ্রমণ করা অনেকটাই ঝুঁকি মুক্ত। ভ্রমণ নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন নই। কিন্তু ভ্রমণের মধ্যদিয়ে মানুষ একসাথে হচ্ছে। আর সেটিই মূল উদ্বেগের কারণ। যেমন ভ্রমণের মধ্যদিয়ে বৃহত্তর পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হচ্ছেন, মানুষ জন্মদিনের উৎসব বা পারিবারিক উৎসবে যোগ দিচ্ছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘কোথাও বেড়াতে গিয়ে এবং সেখান থেকে ফেরার পর মানুষ যে আচরণ করছে তার ওপরেই অনেক কিছু নির্ভর করছে।’

নতুন একটি গবেষণায় দেখা গেছে, স্পেনে বেড়াতে যাওয়া ভ্রমণপিপাসুদের মাধ্যমে ইউরোপের অন্য দেশগুলোতে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসটির নতুন একটি প্রজাতি ছড়িয়ে পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই প্রজাতিটি আরও দ্রুত ছড়িয়ে যেতে সক্ষম।

অ্যামোরি ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের এসোসিয়েট প্রফেসর ড. হেনরি উ বলেন, ‘ভ্রমণকারীদেরকে অবশ্যই সকল অবস্থায় অন্যদের থেকে ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। অন্যসব সতর্কতামূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করা আবশ্যক।’

তাছাড়া ভ্রমণকারীদের কোয়ারেন্টিনের ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে। আর্মিটেজ বলেন, ‘আপনি যদি কম সংক্রমণ ঘটেছে এমন এলাকা থেকে বেশি সংক্রমণ ঘটেছে এমন অঞ্চল ভ্রমণ করেন তাহলে অবশ্যই ফিরে আসার পর কোয়ারেন্টিনে থাকুন। অন্যদিকে যদি বেশি সংক্রমণ ঘটেছে এমন এলাকা থেকে কম সংক্রমণ ঘটেছে এমন এলাকা ভ্রমণ করেন তাহলে সেখানে পৌঁছার পর কোয়ারেন্টিনে থাকুন।’

ড. হেনরি উ মনে করেন, খুব বেশি দরকার না থাকলে এই মুহূর্তে ভ্রমণ না করাই ভালো। ভ্রমণ করতে হলে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

তথ্যসূত্র: হেলথলাইন

 

টাইমস/এনজে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
নাগরিকত্ব সংক্রান্ত নতুন নিয়ম চালু করলো কানাডা Dec 29, 2025
img
‘প্রিয় জেবুকে’ নিয়ে জাইমা রহমানের ফেসবুক পোস্ট Dec 29, 2025
img
সিলেট থেকেই নির্বাচনী কাজ শুরু করবেন তারেক রহমান Dec 29, 2025
img
ঢাকায় তাপমাত্রা নামল ১৩ ডিগ্রিতে! Dec 29, 2025
img
তীব্র শীতে বিপর্যস্ত চুয়াডাঙ্গার জনজীবন Dec 29, 2025
বলিউডে প্রেম ও পারিবারিক চাপের কাহিনী Dec 29, 2025
img
প্রধান শিক্ষকের ভুলে বৃত্তি পরীক্ষা দেওয়া হলো না ১০ শিক্ষার্থীর Dec 29, 2025
img
মাদক ও চোরাচালানে সহযোগিতা করলে ছাড় নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Dec 29, 2025
img
দুপুর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে কুয়াশা দাপট, মেঘলা থাকবে আকাশ Dec 29, 2025
img
সিরাজগঞ্জে ৩০১ বস্তা সার জব্দ ও জরিমানা Dec 29, 2025
img
বর্ষসেরা দেম্বেল, রোনালদোর ঘোষণা: এক হাজার গোল করবই Dec 29, 2025
img
সোমালিল্যান্ড ইস্যুতে ইসরাইলকে কড়া বার্তা হুতির Dec 29, 2025
img
অলরাউন্ডার ডগ ব্রেসওয়েল অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিলেন Dec 29, 2025
img
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন আগামীকাল Dec 29, 2025
img
একদিনে প্রায় ৩ হাজার স্বাক্ষর সংগ্রহ তাসনিম জারার, প্রয়োজন ১৫০০ Dec 29, 2025
img
কামিন্স ও হ্যাজলউডকে দলে নিয়ে স্কোয়াড সাজাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া Dec 29, 2025
img
বুদ্ধিমান দর্শক তৈরি না হলে, ভালো কাজও নীরবে হারিয়ে যায়: সত্যজিৎ রায় Dec 29, 2025
img
ফরিদপুর-৩ আসনে মনোনয়নপত্র জমা বিএনপি প্রার্থী নায়াব ইউসুফের Dec 29, 2025
img
বডি ক্যামেরা কেনার দায়িত্ব পেলেন ৬৪ জেলার এসপি Dec 29, 2025
img
কষ্টই মানুষকে শক্ত করে, আর শক্ত মানুষই সাফল্য পায়: অক্ষয় কুমার Dec 29, 2025