বিলাসবহুল গাড়ি, বিসিএস ক্যাডার পরিচয়ে ৪ কোটি টাকা পকেটে!

এসএম সাইদুর রহমান ৩৭তম বিসিএস ক্যাডার হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন। সরকারি স্টিকার লাগিয়ে তিনি বিলাসবহুল গাড়িতে চলাফেরা করেন। কখনও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, কখনো উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, কখনও পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়ে দাপিয়ে চলেছেন তিনি। চাকরি দেয়ার জন্য সরকারি ওয়েবসাইটের আদলে তিনি একটি ওয়েবসাইট খুলে বিভিন্নজনের কাছ থেকে সিভি সংগ্রহ করতেন। নিয়োগ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে শুধুমাত্র নেত্রকোনা জেলা থেকেই ৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা প্রতারক চক্র। অবশেষে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাকে আটক করেছে র‌্যাব। এসএম সাইদুর রহমানকে বাগেরহাট থেকে আটক করে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। তার প্রতারণার বিষয়ে পূর্বধলা থানার তিনটি ও নেত্রকোনা সদরে ২ টি মামলা করা হয়েছে। পূর্বধলা থানায় করা দুই মামলায় সাইদুরের পাঁচ দিনের রিমানড মঞ্জুর করেছে আদালত।

অভিযোগে জানা যায়, সাইদুর রহমানের বাড়ি খুলনার রূপসা থানার তালিমপুর গ্রামে। তিনি ৩৭ তম বিসিএস ক্যাডারের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, কখনো উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, কখনো সচিবালয়ের কর্মকর্তা, কখনো বাংলাদেশ পুলিশের কর্মকর্তাসহ নানা কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে চলাফেরা করতেন। এমনকি নিজেকে একজন ভিআইপি হিসেবে পরিচয় দিতেন। তার ব্যক্তিগত প্রাইভেটকারে সরকারি স্টিকার লাগানো থাকতো।

মামলার অভিযোগে আরো জানা যায়, খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেজে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের ভুয়া প্রজ্ঞাপন ও নিয়োগপত্র দিয়ে নেত্রকোনা থেকে প্রায় চার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় এই প্রতারক। এঘটনার পর গত অক্টোবর মাসে র‌্যাব সাইদুর রহমানকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে আটক করে খুলনা পাইকগাছা থানায় পুুুুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। আসামির বিরুদ্ধে নেত্রকোনায় তিনটি অভিযোগ থাকায় খুলনার পাইকগাছা পুলিশ তাকে নেত্রকোনা পুুুুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। এ দিকে প্রতারণার শিকার পূর্বধলা উপজেলার ভুক্তভোগী তারা মিয়া ও সোহাগ মিয়ার করা পৃথক দুইটি মামলায় তাকে নেত্রকোনা আদালতে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে আসামি সাইদুর রহমান পূর্বধলা থানায় করা দুটি মামলায় পুলিশের রিমান্ডে রয়েছেন।

প্রতারণার শিকার মামলার বাদী তারিম আহমেদ রিয়াদ বলেন, চাকুরীর কথা বলে সাইদুর ৭০ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছে। রেলওয়ে বিভাগে ভুয়া চাকুরী দিয়ে প্রতারণা করেছে। এই প্রতারক সাইদুর রহমান বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট www.dpe.gov.bd.com জালিয়াতি করে নিজেই একটি www.dpeo.gov.bd.com ওয়েবসাইট খুলে, যেখানে ভুক্তভোগীদের দেখানো হতো সহকারী শিক্ষক পদে বিশেষ বিবেচনায় উত্তীর্ণ করা হয়েছে। এমনকি সাইদুর রহমান সরকারি দপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সিল এবং সই জালিয়াতি করে ভুক্তভোগীদের ভুয়া এডমিট কার্ড, ভাইবা কার্ড, প্রজ্ঞাপন নামা ও নিয়োগপত্র প্রদান করতেন।

 

টাইমস/আরএ

Share this news on:

সর্বশেষ