চলে গেলেন এ টি এম শামসুজ্জামান

পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে গেলেন স্বনামধন্য অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান। আজ শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে নিজ বাসায় মারা গেছেন এই বর্ষীয়ান অভিনেতা ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

তার পুত্রবধূ রুবী এ তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘গত রাতে বেশ দেরি করে ঘুমিয়েছিলেন তিনি। আজ সকালে নাশতা করার জন্য তাকে ডাকতে গিয়ে পরিবারের সদস্যরা দেখতে পান তিনি আর বেঁচে নেই।’

মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন মেয়ে ও দুই ছেলে সহ রেখে গেছেন অসংখ্য ভক্ত।

দীর্ঘদিন ধরে একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন বর্ষীয়ান এই অভিনেতা। ২০১৯ সালের ২৬ এপ্রিল রাতে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছিল। রাতেই তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল রাজধানীর একটি হাসপাতালে।

জানা যায়, এ টি এম শামসুজ্জামানের অন্ত্রে প্যাঁচ লেগে আন্ত্রিক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছিল। এতে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়, করা হয় অস্ত্রোপচার। এরপর থেকে নানাবিধ শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি।

সে বছরের ডিসেম্বরে আবারও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে ভর্তি করা হয় তাকে। দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর আগে চিকিৎসা শেষে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় এ অভিনেতাকে।

এরপর বেশ কিছুদিন শারীরিকভাবে সুস্থ ছিলেন, বাসায় থেকে চিকিৎসা চলছিল। গত বুধবার বিকেলে হঠাৎ তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। অবস্থা কিছুটা ভালো হলে গতকাল শুক্রবার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু গত রাতে তিনি আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন।

এ টি এম শামসুজ্জামানের জন্ম ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানাবাড়িতে। ১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর ‘বিষকন্যা’ চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্র জীবনের শুরু করেন। প্রথম কাহিনী ও চিত্রনাট্য লিখেছেন ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রের জন্য।

অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্র পর্দায় আগমন ১৯৬৫ সালের দিকে। ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ চলচ্চিত্রে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন তিনি। ১৯৮৭ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘দায়ী কে?’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।

গত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে অভিনয় জগতের সাথে জড়িয়ে আছেন বাংলাদেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় এই অভিনেতা। অভিনয় করেছেন অসংখ্য টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে।

অনবদ্য অভিনয়ের জন্য পাঁচ বার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এ ছাড়াও পেয়েছেন আজীবন সম্মাননা, একুশে পদক।

 

টাইমস/এনজে

Share this news on:

সর্বশেষ