‘যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারতের সাথে সম্পর্ক রেখে চলাই চ্যালেঞ্জ’

যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারতের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষার বার্তা দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

তবে এ ভারসাম্য রক্ষা খুব সহজ নয় বলেও মনে করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, বিশ্বের মহাশক্তিধর এই ৩টি বড় দেশের সাথে আমরা ভারসাম্য বজায় রেখে চলেছি। বিষয়টা সহজ নয় তবে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে তা হচ্ছে। আগামীতে আমরা এই সম্পর্কের আরও উন্নয়ন করবো বলে বিশ্বাস।

রোববার (২৯ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক অর্জন-সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ভারত আমাদের বন্ধু, প্রতিবেশী দেশ। আমাদের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। ভারত জি-২০ এ বাংলাদেশকে স্বাগত জানিয়েছে। সেই সাথে চীনও আমাদের উন্নয়ন সহযোগী।

মন্ত্রী বলেন, যেকোনও দেশের পররাষ্ট্রনীতি সেই দেশের স্বার্থে তৈরি করা হয়। দেশের বাস্তবিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে হয়। আমাদের দেশের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিত আমাদের জানতে হবে। রাজনৈতিক যে দিক-দর্শন সেটাও আমাদের জানতে হবে। আমরা এখন খুব ইন্টারডিপেনডেন্ট বিশ্বে থাকি। খুব ডিপেনডেন্ট, একটা কিছু হলেই ঝামেলা হয়ে যায়। এ অবস্থায় আছি।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ- তিনটি বড় দেশ যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারত। এরা শক্তিশালী দেশ। এর মধ্যে দু’জন আমাদের প্রতিবেশী। এদের সঙ্গে আমার এমনভাবে চলতে হবে যাতে, সম্পর্কটা উন্নত করতে পারি।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাখ্যা ও বিভিন্ন সময়ে দেশটির দেওয়া পরামর্শের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, একক দেশ হিসেবে আমাদের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। তার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খুব সুসম্পর্ক আছে। বন্ধু দেশ বলে, তারা অনেক কিছু বলে, সুপারিশ দিতে পারে। বন্ধু না হলে কিছু বলত না, তখন আক্রমণ করত; বন্ধু বলে বেশি সুপারিশ দেয়। সুপারিশ ভালো হলে সেগুলো অবশ্যই গ্রহণ করি।

তিনি বলেন, সবকিছুতে যে আমরা পারফেকশন, এটা ভাবা ঠিক হবে না। আমাদের যদি কোনও দুর্বলতা থাকে, বন্ধু বলবে। আর যদি সত্যি খারাপ কিছু হয়, সেটা দেখব।
ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাখ্যায় মোমেন বলেন, ভারত আমাদের বন্ধু। ঐতিহাসিকভাবে বড় বন্ধু। ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক একটা অপূর্ব সম্পর্ক। বাংলাদেশ-ভারত বড় সমস্যাগুলো সমাধান করেছে। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিনা বুলেটে এ ধরনের অর্জন কেউ করতে পারেনি।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশটির সঙ্গে সোনালী অধ্যায় সৃষ্টি হয়েছে। খুব সুন্দর সম্পর্ক। ভারত এ বছর জি-২০ প্রেসিডেন্সি পেয়েছে, দক্ষিণ এশিয়া থেকে একটি দেশকে দাওয়াত করেছে। আমরা এটার সদস্য না। এই যে সম্মানটা তারা আমাদের দিয়েছে, এটা সম্ভব হয়েছে; সুসম্পর্কের কারণে।
চীনের প্রসঙ্গ টেনে মোমেন বলেন, চীন আমাদের বড় উন্নয়ন সহযোগী। তাদের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য অনেক বেশি। তারাও চাচ্ছে বাণিজ্য আরও বাড়ানোর জন্য। আমাদের অত্যন্ত ভালো সম্পর্ক।

এই তিনটি বড় দেশ ছাড়াও বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ব্যাখ্যায় মোমেন বলেন, বড় দেশগুলো ছাড়াও আমার সামনে চ্যালেঞ্জ, অন্যান্য রাষ্ট্র। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া ও সৌদি আরব। সৌদি আরব ২৬ লাখ লোককে চাকরি দিয়েছে। তার সঙ্গে আমার বিভিন্ন রকমের ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ রয়েছে। জাপানও বড় সহযোগী। তাদের থেকে সবচেয়ে বড় ঋণ নিয়েছি।

রাশিয়া নিয়ে মন্ত্রী বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে বড় সম্পর্ক। তারা আমাদের ঐতিহাসিক বন্ধু। তারা আমাদের বড় নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টের কাজ করছে। যথা সময়ে এটার কাজ শেষ করবে তারা।

আসিয়ানকেও বাংলাদেশের দরকার জানিয়ে মোমেন বলেন, আসিয়ান দেশগুলো আগামীতে শক্তিশালী হচ্ছে। তাদেরও আমরা ধরে রাখতে চাই। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের জন্য তাদের দরকার।
মন্ত্রী বলেন, আমিরাতে আমাদের কয়েক লাখ লোক কাজ করেন। কাতারে কয়েক লাখ লোক কাজ করেন। সবগুলো দেশের সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক রাখার প্রয়োজন।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
দেশে ফেরার আগে লন্ডনের বাসার সামনে সপরিবারে তারেক রহমান Dec 25, 2025
img
সিলেটে এক ঘণ্টা যাত্রা বিরতি দিবেন তারেক রহমান, কড়া নিরাপত্তা Dec 25, 2025
img
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ Dec 25, 2025
img

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

সমঝোতা হলেও এনসিপি প্রার্থীরা শাপলা কলি প্রতীকে নির্বাচন করবেন Dec 25, 2025
img
জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় মান্নার ঋণ পুনঃতফসিল বাতিল করলো ইসলামী ব্যাংক Dec 25, 2025
img

হাদি হত্যা

ফয়সালের স্ত্রী, বান্ধবী, শ্যালকের দায় স্বীকার Dec 25, 2025
img
নতুন দায়িত্ব পেলেন আলী রীয়াজ Dec 25, 2025
img
দেশের পথে তারেক রহমান Dec 25, 2025
img
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ১০ কিলোমিটারে তীব্র যানজট Dec 25, 2025
img
যশোর-৬ আসনের ধানের শীষের মনোনয়ন হারালেন শ্রাবণ Dec 25, 2025
img
আজ শুভ বড়দিন Dec 25, 2025
img
নিঃস্বার্থ ভালোবাসার আদর্শ উদাহরণ মধুবালা Dec 25, 2025
img
বিপিএল স্কোয়াড থেকে ছিটকে গেলেন কুশল মেন্ডিস Dec 25, 2025
img
পদত্যাগ করলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী Dec 25, 2025
img
দেশে ফিরছেন তারেক রহমান, যেভাবে জানবেন ফ্লাইটের অবস্থান Dec 25, 2025
img
পিকচার আভি বাকি হ্যায়: হাসনাত আবদুল্লাহ Dec 24, 2025
img
পারিশ্রমিক ছাড়াই ২০০০ কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন ডা. কামরুল ইসলাম Dec 24, 2025
img
তারেক রহমান এখন দেশের মানুষের কাছে এক ‘আশার বাতিঘর’ : নাছির উদ্দীন Dec 24, 2025
img
হাদি হত্যা: ফয়সালকে পালাতে সহায়তাকারী রাজু ৫ দিনের রিমান্ডে Dec 24, 2025
সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার উপায় Dec 24, 2025