নদী ভাঙ্গনে নিস্ব শেষ সম্বল বিক্রি



সর্বগ্রাসী তিস্তার ভাঙ্গনে আয়ের শেষ সম্বলটুকুও বিক্রি করলেন আব্দুল হান্নান। বছর কয়েক আগ থেকে এই নদীর বুকেই মাছ শিকার করে চলতো তার সংসার কিন্তু খরার সময় আশানুরূপ আয় না হওয়ায় খরচ মেটাতে সুদের উপর ধার নেন দশ হাজার টাকা।

সেই সুদ বেড়ে গলার কাটা হয়েছে, টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন পাওনাদার।উপায়ন্তর না পেয়ে আয়ের শেষ সম্বল নৌকাটিও বিক্রি করে দিচ্ছেন এই জেলে।


লালমনিরহাটের চর গোকুণ্ডা এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে হান্নান এখন পরিবার নিয়ে দিশেহারা।তিস্তার থাবায় বছর কয়েক আগের সুখের সংসারে নেমে এসেছে অভাব অনটন।

তিনি বলেন,কয়েক মাস আগে সুদের উপর টাকা নিয়েছিলাম।এখন পাওনাদার টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে সেজন্য নৌকা বিক্রি করে দিচ্ছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,এখন আয়ের কোন পথ নাই।আল্লার উপর ভরসা করে আছি।কয়েক বছর আগে সড়ক দূর্ঘটনায় পা ভেঙে যায়।এখন কি করে খাবো জানিনা।

এবার বন্যায় গজলডোবার সব জলকপাট খুলে দিয়েছে ভারত আর তাতে কপাল পুরেছে হান্নানের মত তিস্তা পাড়ের দুই তীরবর্তী কয়েক হাজার পরিবারের।

বন্যা কবলিত আল আমিন বলেন,সরকার যদি উত্তরাঞ্চলের মানুষের দিকে তাকায় তাহলে আমাদের উপকার হবে।তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন খুব জরুরি। ফসলের ক্ষেত নষ্ট হচ্ছে প্রতি বছর।

সুমন নামে আরো একজন বলেন,ক্ষরার সময় ভারত পানি ছাড়ে না যখন বন্যা হয় পানির দরকার হয়না তখন পানি ছাড়ে।শুষ্ক মৌসুমে আমরা মাটি খুড়ে পানি বের করে জমিতে সেচ দেই।সরকারের কাছে আবেদন তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে আমাদের যেন এই বিপদ থেকে উদ্ধার করেন।

গোকুণ্ডা ইউপি চেয়ারম্যান রশিদ সরকার টোটন বলেন,হান্নানের বিষয়টি আমার জানা নেই।তবে বন্যা কবলিত এলাকা গুলোতে ইউনিয়ন পরিষদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়া হচ্ছে।ত্রান সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
সব হারিয়ে নিঃস্ব হান্নানের বিষয়ে তিনি বলেন,আমি খোঁজ নিচ্ছি এমন কিছু ঘটলে অবশ্যই তার পাশে দাড়াবো।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে,গত ২৭ আগষ্ট তিস্তা অববাহিকা কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩০ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।এতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। 

উল্লেখ্য স্থানীয় সরকারের মত থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বারবার তিস্তার পানি সমবন্টন চুক্তি নিয়ে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ।আর তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে চিনের আগ্রহ থাকলেও সময়ের সাথে সেটাও ফিকে হয়ে যাচ্ছে।আশাহত হচ্ছেন কয়েক হাজার পরিবার সহ উত্তরাঞ্চলের জনসাধারণ।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
‘বর্ডার ২’ তে বরুণ থেকে দিলজিৎ পাচ্ছেন কত পারিশ্রমিক? Dec 17, 2025
img
এক লাফে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম Dec 17, 2025
img
ট্রাইব্যুনালে নিজের বিচার টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করতে ইনুর আবেদন Dec 17, 2025
img
উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার হুমকি সহ্য করা হবে না: আসামের মুখ্যমন্ত্রী Dec 17, 2025
img
‘দঙ্গল’কে ছাপিয়ে গেল ‘ধুরন্ধর’! Dec 17, 2025
img
১৫ বছর পর ফের একসঙ্গে কমেডি মুভিতে অক্ষয় ও আনীস Dec 17, 2025
img
শ্রমশক্তি রপ্তানিতে বড় বাধা দালাল: প্রধান উপদেষ্টা Dec 17, 2025
img
রজনীকান্তের 'জেলার-২' তে যুক্ত হচ্ছে নোরা ফাতেহি Dec 17, 2025
img
৩০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ সুদের হার বাড়ছে জাপানে Dec 17, 2025
img
বাস্তবেও ‘ভানু’র মতো একতরফা প্রেম অভিনেতা রোনাকের Dec 17, 2025
img
আইপিএল নিলাম শেষে ১০ ফ্র্যাঞ্চাইজির চূড়ান্ত দল Dec 17, 2025
যে ইবাদত শীতকালে করা যায় | ইসলামিক টিপস Dec 17, 2025
নোরা ফাতেহির নাচে মাতাল কণার ‘মেহেন্দি’ Dec 17, 2025
img
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ঘোষণায় তেজগাঁও কলেজের সামনে পুলিশ মোতায়েন Dec 17, 2025
img
অপ্রত্যাশিত দৃশ্য নিয়ে মুখ খুললেন মাধুরী Dec 17, 2025
img
ভেনেজুয়েলার তেলবাহী ট্যাংকার অবরোধের নির্দেশ ট্রাম্পের Dec 17, 2025
img
অস্কারের দৌড়ে আরও একধাপ, সংক্ষিপ্ত তালিকায় ‘হোমবাউন্ড’! Dec 17, 2025
img
জিয়াউর রহমানের সমাধিতে এ্যাবের শ্রদ্ধা Dec 17, 2025
img
আইপিএল নিলামে রেকর্ড গড়ার পরদিন শূন্যে আউট ক্যামেরন গ্রিন Dec 17, 2025
img
অভিনেত্রী আয়েশাকে ‘বডিশেমিং’ করে তোপের মুখে ভারতী Dec 17, 2025