সপ্তাহের ব্যবধানে রিজার্ভ বেড়েছে ৩০০ মিলিয়ন ডলার

দেশে রিজার্ভ নিয়ে যখন উৎকণ্ঠা ঠিক সেই সময়ে ডলার আসতে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩১৮ মিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে। যা বেড়ে ১৯ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। রিজার্ভের এই বৃদ্ধি আগামী সপ্তাহগুলোতেও অব্যাহত থাকতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব-পদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী গত ১২ জুন রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে, চলতি মাস শেষ হওয়ার আগে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার পাবে।

আইএমএফ জুনের শেষ সপ্তাহে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের তৃতীয় কিস্তিতে ১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার ছাড় করতে পারে। এছাড়া বিশ্বব্যাংক বাজেট সহায়তা হিসেবে ৫০০ মিলিয়ন ডলার দিতে যাচ্ছে। এতে রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে আসা তথ্যে দেখা যায়, দেশে চলতি জুন মাসের প্রথম ১৪ দিনে দেশে এসেছে ১৬৪ কোটি ৬৭ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার। এর আগের মাসগুলোর একই সময়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল যথাক্রমে ১১১ কোটি ৮৬ লাখ, ৯৪ কোটি ৩৬ লাখ, ৯৫ কোটি ৬ লাখ, ১০০ কোটি ৬৬ লাখ ও ১০০ কোটি ৫২ লাখ মার্কিন ডলার।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোরবানির ঈদের আগে স্বাভাবিকভাবেই রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে যায়। চলতি জুন মাসের প্রথম ১২ দিনেই ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স এসেছে ১৪৬ কোটি ডলার। গত মে মাসে এসেছিল ২২৫ কোটি ডলার যা গত ৪৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। ধর্মীয় উৎসবগুলোকে সামনে রেখে দেশের অভিবাসী কর্মীরা সাধারণত বেশি অর্থ পাঠান।

এদিকে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-মে মাস পর্যন্ত ১১ মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৩৭ কোটি ২৫ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার। এক মাস বাকি থাকতেই আগের অর্থবছরের প্রায় সমান রেমিট্যান্স এসে পড়েছে। আর গত এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে রেমিট্যান্সের পরিমাণ বেড়েছে ১৯৬ কোটি ডলার, যা ১০ শতাংশের বেশি। এপ্রিলে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠিয়েছিলেন ২০৪ কোটি ডলার। আগের বছরের একই মাসে এসেছিল ১৬৯ কোটি ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আগের অর্থবছরের একই সময় অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-মে মাস পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৯৪১ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার।

এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-মে মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৯১৯ কোটি ৪৪ লাখ ১ হাজার মার্কিন ডলার। এর আগর বছর প্রায় তিনশত কোটি টাকা বেশি এসেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময় দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ২৮৩ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-মে মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৬৩৭ কোটি ২৩ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার।

সদ্য বিদায়ী মে মাসে ২২৫ কোটি ডলার এসেছে দেশে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩২ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেশি। গত বছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৭০ কোটি ডলার। গত এপ্রিল, মার্চ, ফেব্রুয়ারি ও জানুয়ারিতে দেশে যথাক্রমে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০৪ কোটি ৩০ লাখ ৬০ হাজার, ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ৫০ হাজার, ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ও ২১০ কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে আগের বছরের একই মাসের তুলনায় প্রবাসী আয় ৩২ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেড়েছে এবার। আগের মাস এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১০ দশমিক ২৯ শতাংশ ।

Share this news on: