পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগে শিক্ষার্থীরা

কোটা বাতিলের দাবিতে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
 
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে শাহবাগ মোড়ে দখল করেন তারা। এ সময় আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন।
এর আগে, কোটা বাতিলের দাবিতে পূর্বঘোষিত ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালনের জন্য বিকেল ৩টা থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।

এরপর সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা কলা ভবন, ভিসি চত্বর হয়ে শাহবাগে আসেন। শিক্ষার্থীরা আসার আগেই পুলিশ শাহবাগে ব্যারিকেড দিয়ে রাখে। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ব্যারিকেড ভেঙে সেখানে অবস্থান নেন। এ সময় কিছু শিক্ষার্থীকে পুলিশের সাঁজোয়া যানের ওপর উঠে উল্লাস করতে দেখা যায়।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল।

ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় বিক্ষোভ হয়। কোটাব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ কোটা থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরে সে বছরের ৪ অক্টোবর কোটাপদ্ধতি বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

এর মাধ্যমে ৪৬ বছর ধরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে যে কোটাব্যবস্থা ছিল, তা বাতিল হয়ে যায়। পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। সেই রিটের রায়ে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর চাকরিপ্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাঠে নামেন।

টাকা কয়েক দিন আন্দোলনের পর গত ৯ জুলাই কোটা পুনর্বহাল নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। পরদিন হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেন আপিল বিভাগ। এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে। তবে শিক্ষার্থীরা আপিল বিভাগের এই আদেশ প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
টাঙ্গাইলে টুকুর মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিএনপির মশাল মিছিল Dec 05, 2025
img
নেনে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় আর্শীবাদ: মাধুরী দীক্ষিত Dec 05, 2025
img
জুলাই আন্দোলনকে ব্যবসায়িকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে : জাহিদুল Dec 05, 2025
img
পুতিনকে রুশ ভাষায় অনুবাদকৃত গীতা উপহার দিল মোদি Dec 05, 2025
img
ঢাকায় তাপমাত্রা নামল ১৮ ডিগ্রিতে, দিনভর থাকবে শুষ্ক আবহাওয়া Dec 05, 2025
img
পিটিআইয়ের রাজনৈতিক কমিটি ভেঙে দিলেন ইমরান খান Dec 05, 2025
img
জামালপুরে ট্রাক ও মোটরসাইকেল সংঘর্ষে ২ যুবকের প্রাণহানি Dec 05, 2025
img
বলিউডের কিং অফ রোমান্স শাহরুখ খানের বিবাহ নিয়ে পরামর্শ কী? Dec 05, 2025
img
বিশ্ববাজারে সামান্য বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম Dec 05, 2025
img
চুয়াডাঙ্গায় বাড়ছে শীতের তীব্রতা, তাপমাত্রা নামল ১২ ডিগ্রিতে Dec 05, 2025
img
অক্সফোর্ড ইউনিয়নের আমন্ত্রণ পেলেন ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম Dec 05, 2025
img
সীমান্তে বিজিবির অভিযানে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পণ্য জব্দ Dec 05, 2025
img
বেগম খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাচ্ছেন আজ Dec 05, 2025
img
বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় আজ সারাদেশে দোয়া-প্রার্থনা Dec 05, 2025
img
প্রাথমিকের শিক্ষকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত Dec 05, 2025
img
ধূমপানের চেয়ে বেশি ক্ষতিকারক হতে পারে রান্নার ধোঁয়া, কিভাবে? Dec 05, 2025
img
সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রের Dec 05, 2025
img
৫ ডিসেম্বর: ইতিহাসে এই দিনে আলোচিত কী ঘটেছিল? Dec 05, 2025
img
পপকর্ন খেয়েও কি ডায়েট করা যায়? Dec 05, 2025
img
দোনবাস না ছাড়লে রাশিয়া শক্তি দিয়ে দখল করবে : পুতিন Dec 05, 2025