গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত ৪৮

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় এক ঘণ্টার ব্যবধানে ইসরায়েলের তিনটি বিমান হামলায় কমপক্ষে ৪৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা এই তথ্য দিয়েছে। খবর আল-জাজিরার।

ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজার কেন্দ্রস্থলের নুসেইরাত এলাকায় জাতিসংঘ পরিচালিত একটি স্কুলে ২৫ জন নিহত হয়। এ ছাড়া দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরে ১৮ জন এবং গাজার উত্তরাঞ্চলের বেইট লাহিয়া এলাকায় পাঁচজন নিহত হয়েছে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় দেইর এল-বালাহ এলাকায় তাদের মানবিক সাহায্য পরিচালনাকারী কেন্দ্রে আক্রান্ত হয়েছে। গত ৯ মাসের যুদ্ধে ইউএনআরডব্লিউএ পরিচালিত স্কুলগুলোর ৭০ শতাংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এসব হামলায় সেখানে আশ্রয় নেওয়া ৫৩৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

গাজা উপত্যকার দক্ষিণে রাফাহ শহরে ফিলিস্তিনি যোদ্ধা ও ইসরায়েলি সৈন্যদের মধ্যে সম্মুখ যুদ্ধ চলছে। আল-জাজিরার কাছে আসা বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, একজন হামাস যোদ্ধা মাটির নিচে তার অবস্থান থেকে উঠে এসে ট্যাংক বিধ্বংসী রকেটের সাহায্যে একটি ইসরায়েলি ট্যাংকের ওপর হামলা করছে। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন থেকে একজন যোদ্ধা তার ট্যাংক বিধ্বংসী রকেট নিয়ে একটি আর্মার্ড বুলডোজারের দিকে লক্ষ্য স্থির করছে। অন্য একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, একটি ভবনে অবস্থান নেওয়া ইসরায়েলি সৈন্যরা হামলার শিকার হয়েছেন এবং তাদের চারপাশে আগুনের শিখা দেখা যাচ্ছে।

এদিকে গাজায় সাত লাখেরও বেশি মানুষ মারাত্মক স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সংকটে পড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। উপত্যকাটির দেইর এল-বালাহ শহরের বর্জ্য পানি পাম্প করার স্টেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। তারা জানান, জ্বালানি তেলের সরবরাহের অভাবে এসব পাম্প স্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে। ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি সারা শহরে ছড়িয়ে পড়ছে। এর পাশাপাশি বাড়ছে রোগবালাই।

গাজার সীমান্তে ইসরায়েলি বাহিনীর অবরোধের কারণে তেল সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাছাড়া ইসরায়েলি বাহিনী খাদ্য, সুপেয় পানি, ওষুধসহ মানবিক সাহায্য পণ্য সরবরাহেও বাধা দিচ্ছে।

গাজা উপত্যকায় গত বছরের ৭ অক্টোবরের পর থেকে চলতে থাকা হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৩৮ হাজার ৭১৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নিরীহ শিশু ও নারী। এ ছাড়া আহত হয়েছে আরও ৮৯ হাজার ১৬৬ জন।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ঢাকাবাসীর জন্য বড় সুখবর মেট্রোরেল কার্ড রিচার্জে Dec 22, 2025
img
মঞ্চ থেকে কারাগারের পথে মার্কিন র‍্যাপার Dec 22, 2025
img
বুন্দেসলিগায় কেইনের দ্রুততম ‘সেঞ্চুরি’ Dec 22, 2025
img
১৬ বছর পর ভাঙল অভিনেত্রী শ্রীনন্দা শঙ্করের সংসার Dec 22, 2025
img
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৯ Dec 22, 2025
img
সাবেক সাংসদ সুকুমার রঞ্জন ঘোষ আর নেই Dec 22, 2025
img
খালাস চেয়ে সাবেক আইজিপি মামুনের আপিল Dec 22, 2025
img
৪৫তম ম্যাচসেরা পুরস্কার নিয়ে রশিদ-হেলসের সাথে সাকিব Dec 22, 2025
img
সালাহউদ্দিন আম্মারকে মব-সন্ত্রাসী আখ্যা দিল রাবি ছাত্রদল Dec 22, 2025
img
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক প্রদান সৌদি আরবের Dec 22, 2025
img
ভোট দেওয়ার জন্য ৫ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি প্রবাসীর নিবন্ধন Dec 22, 2025
img
অস্ত্রোপচার শেষে পেটে ব্যান্ডেজ নিয়েই শুটিংয়ে ইমরান হাশমি Dec 22, 2025
img
নীলফামারীতে তাপমাত্রা নামল ১৩ ডিগ্রির ঘরে, বাড়ছে শীতের দাপট Dec 22, 2025
img
এ কে খন্দকারের মৃত্যুতে ভারতীয় হাইকমিশনের শোক প্রকাশ Dec 22, 2025
img
লামিনে ইয়ামালের বিশ্বসেরা হওয়ার পথে ব্যক্তিগত জীবনের টিপস Dec 22, 2025
img
সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ Dec 22, 2025
img
বিএনপির মনোনয়ন ফরম নিলেন আসলামসহ আরও ১৫ জন প্রার্থী Dec 22, 2025
img
বিকেলে ‘ভোটের গাড়ি’র প্রচার উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা Dec 22, 2025
img
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বৈঠক Dec 22, 2025
img
১০ হাজার রিজার্ভ সেনার বাড়িতে অস্ত্র রাখার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল Dec 22, 2025