রাজধানীতে সরবরাহ বাড়ায় সবজি, মাছ ও মুরগির দাম কমেছে

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছিল। তবে কারফিউ শিথিল হওয়ায় রাজধানীতে এখন নিত্যপণ্যের সরবরাহ কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। ফলে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে কমতে শুরু করেছে সবজির দাম ও মাছের দাম। প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা কমেছে। সব ধরনের মুরগির দামও কমেছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকালে রাজধানীর শেওড়াপাড়া ও তালতলা বাজার ঘুরে দেখা যায়, গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখী কেজিতে ২০ টাকা কমে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বেগুন কেজিতে ৪০ টাকা কমে ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

করলা ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপের কেজি ৬০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, ঝিঙে ৬০ টাকা, সজনে ১৬০ টাকা এবং শসা ৬০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

ফুলকপি প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ব্রোকলি ৫০ টাকা, পাকা টমেটোর কেজি প্রকারভেদে ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা এবং গাজর ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

লেবুর হালি ১৫ থেকে ৩০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, কলার হালি ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। লাল শাকের আঁটি ১৫ টাকা, লাউ শাক ৪০ টাকা, মুলা শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা, পুঁই শাক ৪০ টাকা।

সপ্তাহ ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আলুর কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। কাঁচামরিচের দাম কেজিতে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কমে প্রকারভেদে ১৬০ থেকে ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহেও কাঁচা মরিচ ৪০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল।

সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ৩০ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার ২০০ থেকে ২১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। সোনালি মুরগি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি হাইব্রিড ২৪০ টাকা, দেশি মুরগি ৬০০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগি ৩৪০ টাকা এবং সাদা লেয়ার ৩৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, গত ২-৩ দিনের তুলনায় সবজির দাম কেজিতে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কমেছে। গত দুইদিন আগে ১ কেজি মাল ৭০ থেকে ৮০ টাকা
ছিল এখন সেই সবজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। পর্যাপ্ত পরিমাণ মাল আমদানি তবে দাম অনেক কম।

আড়তদাররা জানান, বাংলাদেশে এই পাঁচদিনে প্রত্যেকটা মোকামে মাল আটকা পড়ছে। মাল ঠিকঠাক মতো বাজারে আসতে পারে নাই। সে কারণে মাল পচিয়ে ফেলে দেয়া হয়েছে। অবিক্রীত থাকা এসব সবজিতে পানসে হয়েছে আড়তদারদের জীবন। কেননা, বেশি ভাগই পচে গেছে, তারপরও খুঁজছেন চালান তোলার শেষ অবলম্বন। তারা বলছেন, গত দুই দিনে বিকিকিনি করতে না পারায় অধিকাংশ সবজি পচে নষ্ট হয়ে গেছে।

এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঢাকার বাজারগুলোয় কাঁচা পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। এতে আগামী কয়েকদিনে আরও কমবে দর। তবে, বিভিন্ন জেলা থেকে আসা সবজিবাহী ট্রাক দুই থেকে তিনদিন আটকে থাকায় পচে গেছে বেশিরভাগ শাক-সবজি।

এদিকে সবজিতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়তি বলে জানান ক্রেতারা। তারা জানান, আগে ৭০-৮০ টাকার নিচে কোনো সবজির দাম ছিল না। অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকে সবজির দাম অনেকটা কম। তবে মাছ, মুরগির দাম মোটামুটি বাড়তি রয়েছে।

বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন ১৮০ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকা।

বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৬৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, গরুর কলিজা ৭৮০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির মাংসের কেজি এক হাজার ১৫০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা।

সপ্তাহ ব্যবধানে মাছের দামও কিছুটা কমেছে। বাজারগুলোতে ৫০০ গ্রাম আকারের ইলিশ মাছের কেজি এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা এবং ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের মাছ এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

চাষের শিং (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা হয়েছে। দেশি মাগুরের কেজি ৯০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, মৃগেল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের পাঙাস ১৯০ থেকে ২২০ টাকা ও চিংড়ির কেজি ৮০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা।

বোয়ালের কেজি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পোয়া মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, পাবদা ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, মলা ৬০০ টাকা, বাতাসি টেংরা এক হাজার ৪০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৫০০ টাকা, পাঁচমিশালি ২২০ টাকা, রূপচাঁদা এক হাজার ২০০ টাকা, বাইম এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা, দেশি কই এক হাজার ২০০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, আইড় ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০ টাকা এবং কাইক্কা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে
তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সরবরাহ আরও বাড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
কিংবদন্তি চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যার দ্রুত বিচারের দাবি ভক্তদের Nov 01, 2025
img
ভেনিজুয়েলায় হামলার বিষয়ে ট্রাম্পের স্পষ্ট বার্তা Nov 01, 2025
img
নরসিংদীতে দেশি-বিদেশি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ৮ Nov 01, 2025
img
শাহরুখের সৌজন্য ও ব্যক্তিগত কথোপকথনে মুগ্ধ জন সিনা Nov 01, 2025
img
ইসলাম ছাড়া পৃথিবীর কোনো আইনে ন্যায়বিচার সম্ভব নয় : শফিকুল ইসলাম মাসুদ Nov 01, 2025
img
মেয়েদের মেসেজ দিয়ে ভুল করিনি: ঋজু বিশ্বাস Nov 01, 2025
img
৭০ বছর বয়সে সন্তানের বাবা হলেন হলিউড অভিনেতা কেলসি গ্রামার Nov 01, 2025
img
সরকারি কাজ মূল্যায়নে নতুন পদ্ধতি Nov 01, 2025
img
জনগণকে বোকা বানাবেন না, তাহেরকে মির্জা ফখরুল Nov 01, 2025
img
বিকেলেই নেমে এলো সন্ধ্যা, রাজধানীতে মুষলধারে ঝরতে থাকে বৃষ্টি Nov 01, 2025
img
জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার আহ্বান আলালের Nov 01, 2025
img
শতবর্ষী রসুল গাজীর নতুন ঘর নির্মাণের দায়িত্ব নিয়েছেন শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক Nov 01, 2025
img
কাদামাটিতে নেমে গণসংযোগ করলেন আখতার Nov 01, 2025
img
বিশ্বব্যাপী পর্যটন সূচকে শীর্ষ স্থানে মদিনা Nov 01, 2025
img
যারা নির্বাচনের আগে গণভোট চায় না তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী না: মুজিবুর রহমান Nov 01, 2025
img
উচ্চশিক্ষায় মানোন্নয়নে ব্রিটিশ কাউন্সিলের সঙ্গে চুক্তি সই ইউজিসির Nov 01, 2025
img
বাংলাদেশে সব শয়তানি কাজের শুরু আওয়ামী লীগ আমলে : আইন উপদেষ্টা Nov 01, 2025
img
গোল নয়, খেলায় আরও বেশি জড়িত থাকতে চান রুনি Nov 01, 2025
img
নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্বেচ্ছাচারী ও ব্যক্তি নির্ভর : হাসনাত আবদুল্লাহ Nov 01, 2025
img
হারামাইনের সেবায় সৌদি শাসকদের প্রশংসা করলেন গ্র্যান্ড মুফতি Nov 01, 2025