পুলিশের ৮৮ শূন্যপদে এসআই নিয়োগে হাইকোর্টের রায়

বাংলাদেশ পুলিশের ৮৮টি সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) শূন্যপদে নিয়োগের রুলকে যথাযথ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।আজ বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী বি এম ইলিয়াস কচি, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া।

রিটকারীদের আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এ রায়ের ফলে বাংলাদেশ পুলিশের ৮৮ সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) পদে নিয়োগের সুযোগ হলো।

তিনি জানান, ২০২৩ সালের ৩ মে পুলিশের নন-ক্যাডার সাব ইন্সপেক্টর-এসআই (নিরস্ত্র) পদে জনবল নিয়োগ দিতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনলাইন আবেদন পূরণ করে চাকরিপ্রার্থীরা ওয়েব স্ক্রিনিং পাস করে ২০২৩ সালের ৬ থেকে ৮ জুন তিনদিনের শারীরিক পরীক্ষায় অংশ নেন এবং ওই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে লিখিত পরীক্ষার জন্য অনলাইনে আবেদন করেন। এরপর দুইদিনের লিখিত ও মনস্তত্ত্ব পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৫৮৩৯ জন উত্তীর্ণ হন। পরে কম্পিউটার টেস্টে অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হন ৫০৩১ জন।

পরে একই বছরের ১৯ আগস্ট থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ শেষে একই বছরের ১৩ অক্টোবর ৫০৩১ জন প্রার্থীর মধ্যে মাত্র ৯২১ জনকে নিয়োগ দিতে প্রাথমিকভাবে সুপারিশ করা হয়। পরে একই বছরের ১৭ থেকে ২৩ অক্টোবর স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে ৮৫৭ জন চূড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হন। কিন্তু ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর রাজশাহীর সারদার মৌলিক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে ৮২৩ জন যোগদান করেন।

বাংলাদেশ পুলিশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজসহ কয়েকটি অনলাইন পত্রিকার প্রাপ্ত তথ্যমতে, ১৪০০ জনের বেশি শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও সারদায় আবাসন সংকটের জন্য ৯২১ জনকে প্রাথমিকভাবে সুপারিশ করা হয়। ২০২১ সালের ৩৯তম এসআই (নিরস্ত্র) নিয়োগের পর ২০২২ সালের বাংলাদেশ পুলিশের এক পরিসংখ্যানে অনুযায়ী এসআই (নিরস্ত্র) শূন্যপদ সংখ্যা ছিল ১৩২০ জন।

বিজ্ঞপ্তিতে শূন্যপদের নিয়োগ বলা থাকলেও ওই নিয়োগে শূন্যপদ পূরণ হয়নি। আবাসন সংকটের জন্য ৯২১ জনকে প্রাথমিকভাবে সুপারিশ করলেও যোগদান করে ৮২৩ জন, যা চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত থেকে আরও ৯৮ জন কম। কিন্তু শারীরিক পরীক্ষা, লিখিত, মনস্তত্ত্ব পরীক্ষা ও কম্পিউটার টেস্টে অংশগ্রহণ করে সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হওয়ার পরও প্রার্থীদের সুপারিশ করা হয়নি।

এরপর মনস্তত্ত্ব পরীক্ষা ও কম্পিউটার টেস্টে উত্তীর্ণ হয়ে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত না হওয়া মো. এখলাছ চৌধুরীসহ ৮৮ জন ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রিট করেন।

ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর রুল জারি করেন। একই সঙ্গে রিটটি চলমান থাকা অবস্থায় গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি পুনরায় পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) পদের প্রকৃত শূন্যপদের বিপরীতে নিয়োগের লক্ষ্যে উপযুক্ত আগ্রহী পুরুষ ও নারী চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয় । এরপর এসআই পদের ৮৮টি পদ সংরক্ষণের জন্য পুলিশ মহাপরিদর্শক বরাবরে আবেদন করেন ৮৮ জন রিটকারী।

ওই আবেদন নিষ্পত্তি না করায় পুলিশের ৮৮টি সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) পদ সংরক্ষণ চেয়ে হাইকোর্টে একটি সম্পূরক আবেদন করেন রিটকারীরা। পরে ২০২৪ সালের ১৫ মে সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট পুলিশের সর্বশেষ সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত পদ থেকে ৮৮টি পদ সংরক্ষণের নির্দেশ দেয়।


এমআর/টিএ

Share this news on: