অন্ধ হয়েও অলিম্পিকে পাঁচবার স্বর্ণজয়

মারলা লি রানান একজন আমেরিকান অ্যাথলেট। জন্ম থেকেই তিনি অন্ধ। অথচ মেয়েদের পাঁচ হাজার মিটার দৌড় প্রতিযোগিতায় তিনবার জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। প্যারা অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জিতেছেন পাঁচবার।

১৯৬৯ সালের ৪ জানুয়ারি ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা মারিয়াতে জন্মগ্রহণ করেন রানান। ১৯৮৭ সালে ক্যামেরিলো হাইস্কুল থেকে স্নাতক করেন। পরে তিনি সান দিয়েগো স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন। সেখানেই তিনি লং জাম্প, হাই জাম্প, ১০০ মিটার হার্ডল, ৮০০ মিটার ম্যারাথন দৌড়সহ বিভিন্ন ক্রীড়া ইভেন্টে প্রতিযোগিতা শুরু করেন।

১৯৯৪ সালে তিনি “এডুকেশন ইন ডিফব্লাইন্ড’’ বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেন।

১৯৯২ সালে গ্রীষ্মকালীন প্যারা অলিম্পিকে লং জাম্প, ১০০মিটার, ২০০মিটার এবং ৪০০ মিটার দৌড় প্রতিযাগিতায় চারটি স্বর্ণপদক জিতেছিলেন রানান। সেই প্রতিযোগিতায় সাইক্লিং ইভেন্টেও তিনি অংশ নিয়েছিলেন।

মূল ধারার অলিম্পিকে অংশ নিতে তিনি ১৯৯৬ সালে আমেরিকার অলিম্পিক বাছাইপর্বে প্রতিযোগিতা করেছিলেন। মূল ধারায় খেলার যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ হলেও ৮০০ মিটার দৌড়ে দুই মিনিট ৪.৬ সেকেন্ড নিয়ে তিনি জাতীয় রেকর্ড গড়েন।

এই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৬ সালের প্যারা অলিম্পিকে তিনি ‘শট পুট’ ইভেন্টে রৌপ্য এবং ‘পেন্টাথলন’ ইভেন্টে স্বর্ণ পদক জিতেন।

১৯৯৯ সালে উইনপিগে ‘প্যান আমেরিকান গেমসে’ মূল ধারার প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার সুযোগ পান। সে প্রতিযোগিতায় ১৫০০ মিটার দৌড়ে তিনি স্বর্ণপদক জিতেন এবং মার্কিন ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে রেকর্ড গড়েন।

পরের বছর ২০০০ সালে তিনি মূল ধারার সিডনি অলিম্পিকে অংশ নেন এবং ১৫০০ মিটার দৌড় ইভেন্টে ৮ম স্থান লাভ করেন। আর তিনি ইতিহাসে প্রথম জন্মান্ধ ব্যক্তি যিনি মূল ধারার অলিম্পিকে অংশ নিয়েছিলেন।

২০০১ সালে তিনি প্রথমবার ৫০০০ মিটার দৌড়ে জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। পরের বছর ২০০২ সালে ৫০০০ মিটার এবং ১০০০০ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতায়ও তিনি জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হন।

২০০৩ সালে তিনি আবার ৫০০০ মিটার দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন হন এবং ২০০৪ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে অংশ নেন। সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে ২০০৫ সালে তিনি বিরতি নেন। ২০০৬ সালে আবার মাঠে ফিরে আসেন এবং ২০কিলোমিটার দৌড়ে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হন।

আজপর্যন্ত মারলা রানানই একমাত্র দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী আমেরিকান যিনি অলিম্পিক এবং প্যারা-অলিম্পিক দুটিতেই অংশ নিয়েছেন।

তিনি “নো ফিনিশ লাইন: মাই লাইফ এস আই সি ইট” নামে আত্মজীবনী লিখেছেন।

২০০২ এবং ২০০৬ সালে তিনি ইউএসএটিএফ এর ‘রানার অব দ্যা ইয়ার’ পুরস্কার জিতেন।

Share this news on: