অবতরণের পরপরই এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ২৮ বছর বয়সী পাইলট নয়াদিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি বুধবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় শ্রীনগর থেকে দিল্লিগামী একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছিলেন। অবতরণের পরেই অসুস্থ বোধ করে তিনি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন পড়েন। প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার বরাতে এ খবর প্রকাশ করেছে গালফ নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সদ্য বিবাহিত এই পাইলট বিমান অবতরণের পর এয়ারলাইন্সের ডিসপ্যাচ অফিসে অসুস্থ বোধ করেন এবং সেখানে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনাটি নিশ্চিত করে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস-এর এক মুখপাত্র বলেন, 'একজন গুরুত্বপূর্ণ সহকর্মীকে স্বাস্থ্যজনিত কারণে হারিয়ে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। এই শোকের মুহূর্তে আমরা তার পরিবারের পাশে রয়েছি।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা পরিবারের প্রতি সর্বোচ্চ সহায়তা দিচ্ছি, এবং এই অপূরণীয় ক্ষতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি। আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি যেন ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করা হয় এবং অনর্থক জল্পনা-কল্পনা থেকে বিরত থাকা হয়। পাশাপাশি আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।'
পাইলটদের ক্লান্তি রোধে নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে ডিজিসিএ: এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ডিজিসিএ এর আগেই পাইলটদের অতিরিক্ত ক্লান্তি রোধে যথাযথ ফ্লাইট ডিউটি নির্ধারণে কঠোর নীতিমালার প্রস্তাব করেছিল। চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে এই নতুন নিয়ম কার্যকর করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর ডিজিসিএ দিল্লি হাইকোর্টকে জানায় যে তারা সংশোধিত নিয়ম চালু করবে, যার মধ্যে রয়েছে: পাইলটদের সাপ্তাহিক বিশ্রামের সময় ৩৬ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে ৪৮ ঘণ্টা করা হবে, যার মধ্যে নিজের বাসায় কমপক্ষে দুটি রাত কাটানোর সুযোগ অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। একটি সাপ্তাহিক বিশ্রাম শেষ হওয়ার পর পরবর্তীটি শুরুর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৬৮ ঘণ্টা ব্যবধান রাখা যাবে। বিশ্রাম অবশ্যই বাড়ি বা অস্থায়ী আবাসস্থলে নিতে হবে।
এছাড়া আরও কিছু প্রস্তাবিত পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: রাতের ফ্লাইট সময়সীমা সর্বোচ্চ ৮ ঘণ্টা, ডিউটি সময়সীমা সর্বোচ্চ ১০ ঘণ্টা, রাতের অবতরণের সংখ্যা বর্তমান ৬ থেকে কমিয়ে ২ করা হবে।
হাইকোর্ট ডিজিসিএ-কে নির্দেশ দিয়েছে যেন তারা এই পরিবর্তনগুলোর বিষয়ে পাইলট অ্যাসোসিয়েশন, এয়ারলাইনস ও বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে।
এই হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা এবং পাইলটদের ওপর কর্মযজ্ঞের চাপ এবং বাস্তবতা আবারও স্মরণ করিয়ে দিলো কেন দ্রুত এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
এসএন