চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের দিন বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরা ছাড়া অন্য কেউ ফরম তুলতে পারেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগ ও বামপন্থি আইনজীবীরা বলছেন, তারা একাধিকবার চেষ্টা করেও বাধার মুখে পড়েছেন এবং নিরুপায় হয়ে ফিরে এসেছেন।
এমনকি এলডিপি সমর্থিত এবং বর্তমানে জননিরাপত্তা ট্রাইব্যুনালের পিপি শাহাদাত হোসেনও সভাপতি পদের মনোনয়ন ফরম নিতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার নির্ধারিত সময়ে ২১টি পদের জন্য ২১টি ফরম বিক্রি হয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন কতটি ফরম বিক্রি হয়েছে, তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি। অ্যাডহক কমিটির পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, তারা নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের খুঁজে পাচ্ছেন না।
বাধা পাওয়ার অভিযোগ জানিয়ে আইনজীবীদের একটি অংশ অ্যাডহক কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে, যা কমিটি নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠিয়েছে।
ঘটনাটি চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির ১৩২ বছরের ইতিহাসে নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করেছেন কয়েকজন সিনিয়র আইনজীবী। আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীদের দাবি, বিগত ১৬ বছরেও কেউ এমনভাবে ফরম তুলতে বাধা পায়নি।
বিএনপি-জামায়াতপন্থি আইনজীবীরা অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, তারা যথাযথভাবে ফরম তুলেছেন এবং বিরোধীরা বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালাচ্ছেন। তাদের দাবি, ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’দের নির্বাচন থেকে সরিয়ে রাখতে সাধারণ আইনজীবীরা স্লোগান দিয়েছে।
এদিকে সভাপতি পদপ্রার্থী শাহাদাত হোসেন অভিযোগ করেছেন, তিনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও অর্থসহ উপস্থিত হয়েও ফরম পাননি, বরং তাকে শারীরিকভাবে বাধা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টির একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
তিনি আরও বলেন, অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক ফোনে মুখ্য নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও দ্বিতীয়বার তিনি ফোন ধরেননি।
নির্বাচন কমিশনের মুখ্য নির্বাচন কর্মকর্তা তারিক আহমদ বলেন, বাইরে কী হয়েছে তিনি জানেন না এবং কেউ তার কাছে না এলে তিনি ফরম কীভাবে দেবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, এখনো ফরমের সংখ্যা গণনা করেননি।
আওয়ামীপন্থিদের অভিযোগ, তারা গণতান্ত্রিক পন্থায় ফরম তুলতে গিয়েও বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। অ্যাডহক কমিটিকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এবং তারা কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক জানান, তারা নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে দায়িত্ব দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগ কমিশনকে পাঠানো হয়েছে এবং কমিশন থেকে কোনো প্রতিবেদন পেলে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
এদিকে, পূর্ববর্তী নির্বাচন কমিশন ভয়ভীতি ও হেনস্তার অভিযোগে পদত্যাগ করার পর ১৬ ফেব্রুয়ারি একটি ৫ সদস্যের অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়। আইন অনুযায়ী, এই কমিটিকে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। তফসিল অনুযায়ী ১৬ এপ্রিল ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারিত রয়েছে।
এসএস