৬ লাখ বাংলাদেশি ঈদ করতে বিদেশ যাচ্ছে: রিজভী

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে সরকারি দলের নেতাকর্মীসহ অন্তত ৬ লাখ লোক বিদেশে যাচ্ছে ঈদ করতে। আগে ঈদ করতে মানুষ যেত গ্রামের বাড়িতে। সম্পদ বণ্টনের এই অসাম্য এবং দুর্নীতি করার অবারিত ব্যবস্থার জন্য দেশে এক লুটেরা গোষ্ঠীর জন্ম হয়েছে। অন্যদিকে মানুষ অভাবের কারণে করছে আত্মহত্যা। ধানের দাম না পেয়ে কৃষকরা ক্ষেতে আগুণ দিচ্ছে, মহাসড়কে ধান ঢেলে দিচ্ছে।

রাজধানীর নয়াপল্টনে মঙ্গলবার দুপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, অভাবের তাড়নায় যশোরের শার্শা উপজেলার চালিতাবাড়িয়া দীঘা গ্রামে ২৬ মে রাতে দুই শিশু সন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যার পর এক মা আত্মহত্যা করেছেন। এছাড়া ২৫ মে অভাবের কাছে হার মেনে নরসিংদীতে দুই সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন এক বাবা। অভাবে জর্জরিত হয়ে গত এক সপ্তাহে নয় জনের আত্মহত্যা বা অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

তিনি বলেন, ‘এই অবৈধ অনির্বাচিত সরকারের লোকজন একদিকে লুটপাট করে অর্থনীতি ফোকলা করে দিচ্ছে। অন্যদিকে অভাবের তাড়নায় হতদরিদ্র মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। সারাদেশে দরিদ্র মানুষের এখন করুণ দশা। অথচ সরকার বলছে দেশ নাকি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে।’

‘বগুড়ার দুপচাচিয়া উপজেলায় দেবখণ্ড গ্রামে অল্প জমির মালিক মরিয়ম বেগম টেলিভিশন বিক্রি করে ধান কাটার মুজুরি পরিশোধ করেছে। ধানের ন্যায্যমূল্য না থাকায় চারদিকে দেখা দিয়েছে নৈরাজ্য, অস্বস্তি, ক্ষুধা ও হাহাকার। এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই সরকারের। প্রতিদিনই কৃষকের মনে অন্ধকার ঘন থেকে ঘনতর হচ্ছে। সরকারের নীতির কারণে ক্ষুধা, হাহাকার, অনাহার ও অর্ধাহারে মানুষের জীবন বিপন্ন’- রিজভী  বলেন।

কৃষিক্ষেত্রে এই অরাজকতার জন্য কৃষিমন্ত্রী এবং খাদ্যমন্ত্রীকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘আমরা এই মুহূর্তে তাদের পদত্যাগ দাবি করছি। কোনো সভ্য সরকার হলে এত দিনে কৃষিমন্ত্রী পদত্যাগ করতেন। সরকারকে বলব জোর জবরদস্তি করে ক্ষমতায় থেকে দেশের জনগণের ওপর আর জুলুম করবেন না। অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। জনগণকে বাঁচতে দিন।’

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অধ্যাপক শাহিদা রফিক, বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু প্রমুখ।

 

টাইমস/এসআই

 

Share this news on: