বাংলা নববর্ষকে ঘিরে বৈশাখী মেলার আয়োজন আবহমান বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্য। এই মেলা ঘিরে জমজমাট থাকে দেশীয় বিভিন্ন পণ্যের বিকিকিনি। নানা রকমের বাঁশি, একতারা, ঢোল আর বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন খেলা সামগ্রী ও নারীদের গহনা বেশি দেখা যায় বৈশাখী মেলায়।
বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষ্যে এই শহুরে জীবনকে প্রশান্তি দিতে রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয়েছে তেমনি এক বৈশাখী মেলার।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকালে সেগুনবাগিচার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর মৎস্য ভবন সামনে থেকে শিল্পকলা একাডেমি সামনের সড়কে বিভিন্ন রকমের গ্রামীণ-বৈশাখী পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে দোকানিরা।
মেলায় সাধারণত বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের নানা রকম জিনিসপত্র উঠেছে। রমনা বটমূলে আসা উৎসবপ্রিয় মানুষকে মেলা থেকে পছন্দের জিনিসপত্র কিনতে দেখা যায়।
মেলায় পুতুল, বাঁশির সাপ, বেলুন, কাঠের ঘোড়া, পাটের তৈরি ব্যাগ, ঝাঁপি, মাটির হাড়ি, ফুলদানী, পুতুল, কাঠের খেলনা ও শোপিস, নকশিকাঁথা, গামছা, হাতে বানানো গয়না (টিপ, বালা, হার), লোকচিত্র আঁকা ফ্রেম, গৃহস্ত সামগ্রী রয়েছে। মেলা থেকে কেউ কেউ প্রিয় জনকে ফুলের মুকুট কিনে দেন। এতেই হাসি ফুটছে প্রিয়জনের মুখে। তবে শিশুদের মেলা থেকে বিভিন্ন রকম খেলনা কিনতে দেখা যায়।
মালিবাগ থেকে আসা জুয়েল ও আশা দম্পতি রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন। ছায়ানটের অনুষ্ঠান শেষে শিল্পকলা একাডেমির সামনে মেলায় ঘুরতে এসেছেন। তারা জানান, আজ সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরবো। বাসা থেকেই সকালে বের হয়েছি, রাতে যাব। সকালে রমনা বটমূলে গিয়েছিলাম, এখন এখানে তারপর হাতিরঝিল যাব। বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরবো। বাঙালি সংস্কৃতিকে লালন করে বছরে প্রথম দিন আমরা আমাদের প্রিয়জনকে নিয়ে এভাবেই সময়টা কাটিয়ে দিতে চাই।
মেলা একতারা বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, এখানে দুই ধরনের একতারা পাওয়া যায়। একটির দাম আড়াইশ টাকা, আরেকটা ৩০০ টাকা।
প্লাস্টিকের বাঁশি বিক্রি করছেন রমিজ আলী। প্রতিটি বাঁশি ১০০ টাকা করে তিনি বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, সকাল থেকে প্রায় ২০ থেকে ২৫টি বাঁশি বিক্রি করেছি। ১২০ বাঁশি নিয়ে এসেছি ইনশাল্লাহ সবগুলো শেষ হয়ে যাবে।
এদিকে শিল্পকলা একাডেমিতে ১৩ ও ১৪ এপ্রিল দুই দিনব্যাপী উৎসবের আয়োজন করেছে ‘নবপ্রাণ আন্দোলন’। এতে গান, নৃত্য, নাটক, আবৃত্তি ও প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছেন দেশের খ্যাতনামা শিল্পীরা।
এসএন