ইয়েমেনে ফের মার্কিন বিমান হামলা, নিহত ৮০ ছাড়াল

ইয়েমেনের হোদাইদাহ প্রদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে চালানো ১৩টি বিমান হামলায় উত্তেজনা আরও বেড়েছে। হুতি-নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম আল মাসিরাহ জানিয়েছে, শনিবারের এই হামলার মূল লক্ষ্য ছিল হোদাইদাহর বন্দর ও বিমানবন্দর এলাকা।

এর মাত্র কয়েকদিন আগেই, ১৭ এপ্রিল রাস ইসা বন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের চালানো হামলায় প্রাণ হারায় অন্তত ৮০ জন এবং আহত হয় ১৫০ জনের বেশি। এর ধারাবাহিকতায় এবার রাজধানী সানার আল-থাওরা, বানি মাতার ও আল-সাফিয়াহ এলাকাতেও হামলা চালানো হয়েছে, যেখানে তিনজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছে বলে দাবি করেছে আল মাসিরাহ।

হুতি নেতারা মার্কিন হামলার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, এসব হামলা তাদের প্রতিরোধকে দমিয়ে রাখতে পারবে না বরং তারা ‘আরও প্রতিরোধমূলক অভিযান’ চালিয়ে যাবে।

এই অভিযান এমন এক সময় চালানো হলো যখন যুক্তরাষ্ট্র হুতিদের বিরুদ্ধে সামরিক চাপ জোরদার করেছে। কয়েক সপ্তাহ আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন হুতিদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরু করে। লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে একের পর এক হামলার জন্য হুতিদের দায়ী করা হচ্ছে।

মার্কিন পক্ষের দাবি, হুতিরা গত নভেম্বর থেকে ১০০-রও বেশি জাহাজে হামলা চালিয়েছে, যেগুলো তারা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে মনে করছে। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে এসব হামলা চালানো হয়েছে বলেও দাবি হুতিদের।

হুতি কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসের আল-আতিফি বলেন, “আমেরিকার এই অপরাধ গাজা-সমর্থনে ইয়েমেনিদের মনোবল ভাঙতে পারবে না; বরং তা আরও দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।”

এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলায় বেসামরিক হতাহতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার মুখপাত্র জানান, হামলায় পাঁচজন মানবিক সহায়তা কর্মী আহত হয়েছেন এবং রাস ইসা বন্দরে তেল ও গ্যাস নিঃসরণের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) জানিয়েছে, রাস ইসা বন্দর এবং এর তেল পাইপলাইন ইয়েমেনের অর্থনীতি ও মানবিক সহায়তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশটির ৭০ শতাংশ পণ্য আমদানি ও ৮০ শতাংশ মানবিক সহায়তা এই বন্দরগুলোর ওপর নির্ভরশীল।

বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, ক্রমাগত এই ধরনের হামলা ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী মানবিক সংকটকে আরও তীব্র করে তুলতে পারে।


এসএস/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
রাশিয়ার পর আফগানিস্তানকে স্বীকৃতি দিচ্ছে আরও যেসব প্রভাবশালী দেশ Jul 07, 2025
img
ইরানের ‘শান্তিপূর্ণ’ পরমাণু কেন্দ্রে হামলা, মোদির সামনেই যৌথ বিবৃতি দিয়েছে ব্রিকস Jul 07, 2025
img
সরকারি অফিসে কেন ঘুষ দিয়ে কাজ করাতে হবে?: তাসনিম জারা Jul 07, 2025
img
ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সমালোচকদের কড়া জবাব দিলেন গিল Jul 07, 2025
img
মাস্কের আমেরিকা পার্টিকে ‘হাস্যকর’ বললেন ট্রাম্প Jul 07, 2025
img
দেশে মবের কোনো বিচার হচ্ছে না : মাসুদ কামাল Jul 07, 2025
img
ফের পাকিস্তানি তারকাদের নিয়ে কঠোর অবস্থানে ভারত Jul 07, 2025
img
৫ মাস পর জাতীয় নির্বাচন হবে ধরে নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Jul 07, 2025
img
বিশ্বে বায়ুদূষণে শীর্ষ শহর কুয়েত সিটি, ঢাকার অবস্থান ২৬তম Jul 07, 2025
img
গাজা ইসরায়েলি বিমান হামলায় প্রাণ গেল আরও ৮১ জনের Jul 07, 2025
img
দেশের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় জনগণ ঐক্যবদ্ধ : মির্জা ফখরুল Jul 07, 2025
img
দুপুরের মধ্যে দেশের ৭ জেলায় ৬০ কি.মি. বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস Jul 07, 2025
আ.লীগের নাম, তার ইতিহাস, তার অবদান ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়: রনি Jul 07, 2025
১০ মিনিটে গোটা বিশ্বের সারাদিনের সর্বশেষ আলোচিত সব খবর Jul 07, 2025
সীমান্তে দাদাদের বাহাদুরির দিন শেষ মন্তব্য নাহিদের Jul 07, 2025
img
টেক্সাসে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮২, নিখোঁজ ৪১ Jul 07, 2025
img
আজ ঢাকার যেসব এলাকায় ১১ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে Jul 07, 2025
‘সীমান্তে অনেক বাহাদুরি হয়েছে দাদাদের, সেই দিন শেষ’ Jul 07, 2025
img
‘আমরা আপনাদের নিরাশ করব না, বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে যেতে চাই’ সংবর্ধনায় ঋতুপর্ণা-আফঈদার প্রতিশ্রুতি Jul 07, 2025
img
নারী ফুটবলারদের সম্মানে মধ্যরাতে সংবর্ধনা দিল বাফুফে Jul 07, 2025