পাকিস্তানিদের ভারতে আসা বন্ধ করে দিল মোদী সরকার। পাকিস্তানিদের জন্য সমস্ত ‘সার্ক’ ভিসা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। আগে যে ভিসাগুলি দেওয়া হয়েছিল, সেগুলিও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। ওই ভিসার মাধ্যমে যে পাকিস্তানিরা বর্তমানে ভারতে রয়েছেন, তাঁদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়তে হবে। স্থগিত রাখা হচ্ছে সিন্ধু জলচুক্তিও। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া বন্ধ না করা পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।
বস্তুত, ‘সার্ক’ সদস্য দেশগুলিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে যোগাযোগ আরও নিবিড় করতে ১৯৮৮ সালে সদস্য রাষ্ট্রগুলি ‘সার্ক ভিসা এক্সেম্পশন স্কিম’ বা এসভিইএস নামে একটি বিশেষ ব্যবস্থা চালু করেছিল। ওই এসভিইএস ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে ওয়াঘা-আট্টারি সীমান্তও। ওই সীমান্ত পথে যাঁরা ইতিমধ্য়ে ভারতে প্রবেশ করেছেন, তাঁদের ভারত থেকে ফেরার জন্য ১ মে পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি হাইকমিশনে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত আধিকারিকদের ‘অবাঞ্ছিত’ হিসাবে ঘোষণা করেছে নয়াদিল্লি। এক সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ইসলামবাদেও ভারতীয় হাইকমিশন থেকে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত আধিকারিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নয়াদিল্লি। ভারতে থাকা পাকিস্তানি দূতাবাসের আধিকারিক সংখ্যাও আগামী ১ মে থেকে ৫৫ থেকে ৩০-এ নামিয়ে আনতে বলা হয়েছে। ভারতও একই পদক্ষেপ করবে বলে জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক।
মঙ্গলবার কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের হত্যালীলায় অন্তত ২৬ জন নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই পর্যটক। ওই ঘটনার দায়স্বীকার করেছে পাক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-ত্যায়বার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। বুধবার সকাল থেকে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে নয়াদিল্লিতে। শেষে সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। ওই বৈঠক শেষ হতে না হতেই সাংবাদিক বৈঠকে বসে বিদেশ মন্ত্রক। ভিসা বাতিল ছাড়াও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এক গুচ্ছ পদক্ষেপ করা হয় সেখান থেকে।
বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, নিরাপত্তা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার কমিটির বৈঠকে পরিস্থিতি নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়েছে। দেশের প্রতিটি বাহিনীতে নজরদারি আরও বৃৃদ্ধি করতে বলা হয়েছে। হত্যাকারীরা এবং তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপের বিষয়টিও দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক।
ভারতের সিদ্ধান্তের পরে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির একটি বৈঠক ডেকেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
এমআর/টিএ