চ্যালেঞ্জিং বাজেট নিয়ে আসছেন মুস্তফা কামাল

বিগত ১০ বছরের মধ্যে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি চাপে রয়েছে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি। আর এমন পরিস্থিতিতে বহুমুখী চ্যালেঞ্জ নিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তার প্রথম বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছেন।

‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ : সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’- শিরোনামের এবারের বাজেট তৈরি হয়েছে ২০৪১ সালকে টার্গেট করে।

সোয়া পাঁচ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ের ফর্দ সাজিয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী কামাল।

মুস্তফা কামালের পূর্বসূরি আবুল মাল আবদুল মুহিত আওয়ামী লীগের ভোট সামনে রেখে বিদায়ী অর্থবছরে যে বাজেট দিয়েছিলেন, তার আকার ছিল ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। ওই অংক ছিল ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের ২৫ শতাংশ বেশি এবং জিডিপির ১৮.৩ শতাংশের সমান।

তবে অর্থবছর শেষে গত অর্থবছরের যে সংশোধিত বাজেট সংসদে তোলা হচ্ছে, তাতে মুহিতের দেয়া ওই বাজেটের আকার নেমে আসছে চার লাখ ৪২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকায়।

সেই হিসাবে বর্তমান অর্থমন্ত্রী কামাল বাজেটের আকার বাড়ালেও উচ্চাকাঙ্ক্ষী কোনো বড় পদক্ষেপ নিতে চাইছেন না। বরং আগের বাজেটের ধারাবাহিতা বজায় রেখে বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা সাজানোর দিকেই তার মনোযোগ।

তবে এ বাজেট সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে সরকারকে মুখোমুখি হতে হবে নানা প্রতিকূলতার। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- প্রবৃদ্ধিতে অসমতা, বিনিয়োগ সংকট, সুশাসনের ঘাটতি, ব্যাংকিং খাতের দুরবস্থা, অর্থনীতির আকারে রাজস্ব আদায় কম, বৈদেশিক লেনদেন ঘাটতি।

তবে এসব চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে তিনি প্রবৃদ্ধিকে আগামী ৩ বছরে ৮ দশমিক ৬ শতাংশের ঘরে নেয়ার স্বপ্ন দেখছেন। বিশাল ব্যয়কে মেলাতে গিয়ে উচ্চ রাজস্ব আদায়ের হিসাবও করেছেন তিনি।

শুধু তাই নয়, তিনি ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে চান ৮ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে এ প্রবৃদ্ধিকে টেনে নিতে চান ৮ দশমিক ৬ শতাংশ।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়নে জোর দেয়া হবে এবারের বাজেটে। আয় বৈষম্য কমাতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় নতুন উদ্যোগ থাকবে।

দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের জন্য একাধিক স্তর সৃষ্টির নির্দেশনা থাকতে পারে এবার। প্রবাসী আয় ও তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য বাজেটে থাকতে পারে প্রণোদনার সুখবর।

অর্থমন্ত্রী আগেই জানিয়েছেন, নতুন বাজেটে তিনি কর হার বাড়াতে চান না। বরং করের আওতা বাড়িয়ে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে চান।

মন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতার যে খসড়া তৈরি করা হয়েছে, সেখানে বাজেটের সম্ভাব্য আকার ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এ ব্যয় মেটাতে আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ আয় হবে ৩ লাখ ৮১ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা।

আয় ও ব্যয়ের ফারাক ঘাটতি থাকবে (অনুদানসহ) ১ লাখ ৪১ হাজার ২১২ কোটি টাকা। আর অনুদান ছাড়া এ ঘাটতির পরিমাণ হবে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এটি তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকার ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের প্রথম বাজেট। যদিও গত সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী হিসেবে অনেক বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন তিনি।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
প্রথমবারের মতো জুটি বেঁধেছেন সজল ও অপু বিশ্বাস Dec 30, 2025
img
শাহরুখ সালমান আমিরের পর কে, প্রশ্নে বলিউড? Dec 30, 2025
img
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা স্থিতিশীল রাখতে হবে: আইজিপি Dec 30, 2025
img
বুড়িগঙ্গার পানি নিয়ে আক্ষেপ মোশাররফ করিমের Dec 30, 2025
img
জকসু নির্বাচন আজ, ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ Dec 30, 2025
img
ঢাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ১৬৪২ মামলা Dec 30, 2025
img
ইউটিউব ভিউয়ে শীর্ষে জোভান-তটিনীর নাটক Dec 30, 2025
img
সুষ্ঠু ভোট হলে ধানের শীষের বিজয় সুনিশ্চিত : শহিদুল ইসলাম বাবুল Dec 30, 2025
img
খালেদা জিয়া অত্যন্ত সংকটময় সময় অতিক্রম করছেন: ডা. জাহিদ Dec 30, 2025
img
তেলেঙ্গানায় ১০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগে সালমান খান ! Dec 30, 2025
img
খালেদা জিয়াকে দেখে হাসপাতাল ছাড়লেন তারেক রহমান Dec 30, 2025
img
২৩ পরিচালকের সঙ্গে ২৩ হিট, বলিউডে সালমানের অনন্য রেকর্ড Dec 30, 2025
img
১৪ ঘণ্টা পর ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে ট্রেন চলাচল শুরু Dec 30, 2025
img
মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন ব্যারিস্টার মওদুদের স্ত্রী হাসনা Dec 30, 2025
img
অপারেশন ডেভিল হান্টে গ্রেপ্তার ৫৯১ জন Dec 30, 2025
img
‘দাদা গুলি করে দেই?’ বলে চালানো গুলিতে প্রাণ গেল আনসার সদস্যের Dec 30, 2025
img
নড়াইলের দুটি আসনে মনোনয়ন জমা দিলেন ২৪ প্রার্থী, স্বতন্ত্র ১১ জন Dec 30, 2025
img
দিনাজপুরের ৬টি আসনে মনোনয়ন দাখিল করলেন ৪৮ প্রার্থী Dec 30, 2025
img
প্রকৃতি ও মানুষের জন্য কাজ করা প্রতিষ্ঠানই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন Dec 30, 2025
img
হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে মাদারীপুরে মহাসড়কে বিক্ষোভ Dec 30, 2025