গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বাধা ইসরাইলের, আন্তর্জাতিক আদালতে শুনানি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ত্রাণ ঢুকতে দেওয়ার মানবিক বাধ্যবাধকতা নিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) শুনানি শুরু হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে জাতিসংঘের প্রধান আদালত আইসিজের মূল ভবন পিস প্যালেসে শুনানি শুরু হয়। খবর আলজাজিরার।

মৌখিক এই শুনানি চলবে পাঁচ দিন। যদিও ইসরাইল মৌখিক শুনানিতে (ওরাল প্রসিডিংসে) অংশ নিচ্ছে না তবে, তারা লিখিত পরামর্শ ও আপত্তি জমা দিয়েছে।

আইসিজের শুনানির শুরুতে কথা বলেন সুইডেনের আইনজীবী ও কূটনীতিক এলিনর হামারশোল্ড। ২০২৫ সাল থেকে তিনি জাতিসংঘের আইনবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং প্রধান আইন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সূচনা বক্তব্য তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় কোনো দেশ বলপ্রয়োগ করে অন্য দেশের ভূখণ্ড অধিগ্রহণ করতে পারে না। এটা নিষিদ্ধ।’

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে হামারশোল্ড বলেন, ফিলিস্তিনের অধিকৃত অঞ্চলগুলোর ওপর ইসরাইলের সার্বভৌমত্ব দাবি করার কোনো অধিকার নেই। কিন্তু ইসরাইলের পার্লামেন্ট জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে (ইউএনআরডব্লিউএ) অবৈধ ঘোষণা করেছে। এর মাধ্যমে দেশটি আসলে ফিলিস্তিনের অধিকৃত ভূখণ্ডের ওপর সার্বভৌমত্ব বিস্তারের চেষ্টা করেছে।’

হামারশোল্ডের যুক্তি, ‘ইসরাইলের পার্লামেন্টে গৃহীত এসব আইন এবং অধিকৃত অঞ্চলে প্রয়োগযোগ্য দেশটির অন্যান্য আইনের ভিত্তিতে নেওয়া পদক্ষেপগুলো আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ইসরাইলের এসব কাজ ইউএনআরডব্লিউএর আওতায় দেশটির কর্তব্যের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ।’

দখলকারী শক্তি হিসেবে ইসরাইল আন্তর্জাতিক মানবিক আইন এবং জাতিসংঘ সনদের বাধ্যবাধকতা মনে চলতে বাধ্য বলে মত দেন হামারশোল্ড। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণ এবং জাতিসংঘ কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ইসরাইলের দায়িত্ব।’

২০২৪ সালের অক্টোবরে ইউএনআরডব্লিউএকে অবৈধ ঘোষণা করে ইসরাইলি পার্লামেন্ট। ইসরাইল জাতিসংঘের সদস্য হওয়ায় বিলটির মধ্য দিয়ে বিশ্ব সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাকালীন সনদ লঙ্ঘিত হয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

তেল আবিবের এই বিলের বিরুদ্ধে সারা বিশ্বে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। সনদ অনুযায়ী, জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বিশেষ অধিকার ও নিরাপত্তাসুবিধা ভোগ করে। তাই ইসরাইলের ইউএনআরডব্লিউএকে অবৈধ ঘোষণার এখতিয়ারের বিরুদ্ধে আইসিজেতে আজ শুনানি শুরু হয়েছে।

আরআর/এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
পেরুতে মিলল ৩৫০০ বছরের পুরোনো প্রাচীন নগরীর সন্ধান Jul 07, 2025
img
চট্টগ্রামের সাবেক এমপি ফজলে করিমকে হাজির করা হলো ট্রাইব্যুনালে Jul 07, 2025
img
শাকিবের সঙ্গে মিষ্টি জান্নাত ছবি প্রকাশ, শুভ কামনা জানালেন ভক্তরা! Jul 07, 2025
img
তারেক রহমানকে হতে হবে জনগণের ঐক্যের প্রতীক : জিল্লুর রহমান Jul 07, 2025
img
বেনাপোল কাস্টমসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩১৭ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় Jul 07, 2025
img
অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক ম্যাচেই ইতিহাসে নাম লেখালেন মুল্ডার Jul 07, 2025
img
দেশে কত দামে স্বর্ণ ও রুপা বিক্রি হচ্ছে আজ? Jul 07, 2025
img
গাজীপুরে বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার Jul 07, 2025
img
মাজার জিয়ারতসহ জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে দেখা করতে সিলেট যাচ্ছেন মির্জা ফখরুল Jul 07, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রকে ২-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতল মেক্সিকো Jul 07, 2025
img
শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ Jul 07, 2025
img
‘বাংলা ব্লকেড’-এর নামকরণ বিষয়ে যা বললেন সারজিস Jul 07, 2025
img
নির্বাচন পেছালে বিএনপি ছাড়া সব দলের লাভ: রুমিন ফারহানা Jul 07, 2025
img
আজ ঢাকার আকাশ মেঘলা থাকবে Jul 07, 2025
img
৭ জুলাই: ইতিহাসে আজকের দিনের উল্লেখযোগ্য যত ঘটনা Jul 07, 2025
img
ইসরায়েলের বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল ইয়েমেন Jul 07, 2025
img
কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য নতুন নিয়ম চালু করছে ইউটিউব Jul 07, 2025
img
পবিত্র হজ পালন শেষে দেশে ফিরলেন ৭৩ হাজার ৪৯৩ হাজি Jul 07, 2025
img
জাভেদ মিয়াঁদাদের এক ছক্কায় ম্লান হয়েছিল আমিরের বিয়ের আনন্দ Jul 07, 2025
img
মাস্ককে রাজনীতি বাদ দিয়ে ব্যবসায় মনোযোগ দিতে বললেন স্কট বেসেন্ট Jul 07, 2025