নোয়াখালীর সোনাইমুরিতে ১৬ সেন্টিমিটার লম্বা লেজ নিয়ে একটি কন্যা শিশু জন্মগ্রহণ করেছে। শিশুটির বয়স মাত্র ১৫ দিন। তিনদিন আগে (মঙ্গলবার) অস্ত্রোপচার করে তার ‘লেজটি’ অপসারণ করা হয়েছে।
তবে মানুষের শরীরে ‘লেজ’ গজানোর ঘটনা বিশ্বে বিরল। বাংলাদেশে এই প্রথম এত বড় ‘লেজওয়ালা’ শিশুর জন্ম হলো।
ঐ শিশুর চিকিৎসক নজরুল ইসলাম আকাশ বাংলাদেশ টাইমস’কে বলেন, মানুষের শরীরে ‘লেজ’ গজানো একটি বিরল ঘটনা। ১৯৫০ সালের পরে ৫০টির মতো রোগীর রিপোর্টিং হয়েছে। তবে বাংলাদেশে এই প্রথম এ ধরনের ঘটনা ঘটলো।
তিনি বলেন, শিশুটির গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুরিতে। ১৬ সেন্টিমিটার লম্বা লেজ নিয়ে ৩০ মে জন্মগ্রহণ করে। পরে চিকিৎসার জন্য ঢাকা শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নজরুল ইসলাম আকাশ বলেন, কয়েকদিন আগে শিশুটির বিরল এই রোগের কথা জানতে পারি। আমার জানা মতে বাংলাদেশে এ রকম ঘটনার কোনো রিপোর্টিং করা হয়নি।
তিনি বলেন, এটা হচ্ছে হিউম্যান টেইল বা মানুষের লেজ। আর লেজটা সাইজে একটু বড়। প্রায় ১৫ বা ১৬ সেন্টিমিটার। এটাকে রিউনাল কল বা স্পাইডাল বাইফিডা অকাল্ডও বলা হয়। এটা ত্বকের সাথে সংযুক্ত। সেই ক্ষেত্রে এর চিকিৎসা খুব একটা জটিলতা সৃষ্টি করে না। আমরা সফলতার সঙ্গে এটির অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেছি।
এই চিকিৎসক আরও বলেন, বর্তমানে শিশুটি ভালো আছে। শিশুটিকে আমরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখেছি। তার অন্য কোনো সমস্যা নেই। তাই শিশুটিকে ছুটি দিয়ে দিয়েছি।
বিরল এই রোগটি কেন হয় সে বিষয়ে তিনি বলেন, এ ধরনের রোগের নাম হচ্ছে- স্পাইরাল বাইফিডা অকাল্ড বলা যাবে। অথবা সাধারণ মানুষকে বোঝানোর জন্য এটাকে হিউম্যান টেইল বলা যাবে। অথবা স্কিন অ্যাপেন্ডেইজেজ বলা যাবে। এটা জন্মগত ত্রুটির কারণে হচ্ছে না।
তিনি বলেন, কোনো কারণে ইনভায়রনমেন্ট হলো না তখন কোনো কারণে ইনভেস্টেরিয়াল লেবেল থেকে থাকে; সেজন্য এরকম হতে পারে।
ডা. আকাশ বলেন, এ ধরনের রোগ মিলিয়ন বিলিয়নের মধ্যেও একজনের হলেও হতে পারে। সারা পৃথিবীতে তা হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০টা। আর পৃথিবীতে তো ছয়শত কোটি লোক আছে। এরমধ্যে রিপোর্টিং হচ্ছে ৫০ টির মতো, তাও ১৯৫০ সালের মাঝামাঝিতে।
ভারতে কিছু আছে যারা অপারেশন করে না। সেখানে রিপোর্টিং করা আছে। তারা এটাকে দেবতার সঙ্গে মিলিয়ে ফেলেন।
তবে লেজ হওয়ায় কোনো সমস্যা নেই। এই রোগের জন্য অপারেশন করতে আমাদের ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়।
টাইমস/টিআর/জেডটি