ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের দুই ছাত্র উপদেষ্টা ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি।
শনিবার (১৭ মে) বিকেলে খুলনার সার্কিট হাউজ ময়দানে খুলনা ও বরিশাল বিভাগীয় ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এ দাবি করেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল যৌথভাবে এ সমাবেশের আয়োজন করে।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পরে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সাংবিধানিকভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে।
কিন্তু মনে করবেন না, রোজ কেয়ামত পর্যন্ত আপনাদেরকে আমরা এই জায়গায় দেখতে চাইবো। আপনার সরকার, এখন মানুষ বলছে ‘এনসিপি মার্কা সরকার’। আপনার সরকারে এনসিপির দুইজন প্রতিনিধি বিদ্যমান। তারা উপদেষ্টা, তারা আবার এনসিপির সংগঠন করেন।
অফিসিয়ালি করে না। কিন্তু সবাই সবকিছু জানে। ওপেন সিক্রেট! যদি আপনি নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে চান- তাহলে সেই এনসিপি মার্কা দুইজন উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে বলুন। যদি পদত্যাগ না করে আপনি বিদায় করুন।’
তিনি বলেন, ‘একজন বিদেশি নাগরিককে আপনি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা করেছেন। আপনার কী সেই আক্কেল-জ্ঞান নাই। একজন বিদেশি নাগরিকের কাছে এই দেশের সেনাবাহিনী নিরাপত্তা সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রদান করবে- কিভাবে ভাবলেন। তিনি মানবিক করিডরের নামে বাংলাদেশকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করতে চায়। বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে আপনি কথা বলেননি।
এ দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোন আলাপ-আলোচনা করেননি। অত্যন্ত ‘অ্যারোগেন্টলি’ আপনার সেই উপদেষ্টা বলছে, ‘তাতে নাকি কিছু যায় আসে না’। এই জনসভা থেকে দাবি করছি, সেই জাতীয় উপদেষ্টাকে আপনি বিদায় করুন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হয় নিজে পদত্যাগ করবেন, না হয় আপনি তাকে বিদায় করবেন। এ দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোন জাতীয় দায়িত্ব বিদেশি নাগরিকের কাছে থাকতে পারে না। এই নাগরিক ষড়যন্ত্র করছে, বাংলাদেশ একটি অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য। আমরা তা হতে দেব না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই দেশের বন্দর, করিডর সবকিছু নাকি ইউনূস সরকারের অধিকারের মধ্যে পড়ে। বিদেশি আপনি কী কণ্ঠে আর্জি করে এসেছেন জানি না। আপনি অবলীলাক্রমে বাংলাদেশের সমুন্দ্র বন্দর, নদী বন্দর, করিডর সব বিদেশিদের হাতে হস্তান্তর করবেন। কী চুক্তি করে এসেছেন? কী এখতিয়ার আছে আপনার? কী ম্যান্ডেট নিয়ে এসেছেন! আপানার একমাত্র ম্যান্ডেট- বাংলাদেশ একটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন করা। আমরা বলেছিলাম, যথেষ্ঠ হয়েছে।’
ফ্যাসিবাদের দোসরদেরকে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে অপসারণের দাবি জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, আমারা আগেই বলেছিলাম, আপনার উপদেষ্টা পরিষদে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর আছে। আমরা চিহ্নিত করে দিয়েছিলাম। এখন কিছু বিদেশিদের দোসর আছে- আমরা এখন তাদের অপসারণের কথা বলছি। আর যারা এনজিও মার্কা উপদেষ্টা আছে, যারা আপনাকে পরামর্শ দিচ্ছে- ‘বাংলাদেশের জনগণের কথা শোনার প্রয়োজন নাই’। তাদের আপনি অপসারণ করুন। না হলে আপনি সসম্মানে বিদায় নিতে পারবেন কিনা - আমি অন্তত: সংশয়ে।
এফপি/এ্সএন