লিবিয়ায় হাসপাতালের হিমঘর থেকে উদ্ধার হলো ৫৮ অজ্ঞাত মরদেহ

ত্রিপোলির একটি হাসপাতালের হিমঘরে ৫৮টি অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার হয়েছে। হাসপাতালটি একটি মিলিশিয়া গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে ছিল, যার প্রধানকে গত সপ্তাহে হত্যা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে লিবিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সোমবার (১৯ মে) ‘আবু সালিম এক্সিডেন্ট’ হাসপাতালের হিমঘরে এই লাশগুলো পাওয়া যায়। হাসপাতালটি ঘনবসতিপূর্ণ আবু সালিম এলাকায় অবস্থিত।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একটি রিপোর্টের ভিত্তিতে অনুসন্ধান চালিয়ে এই লাশগুলো উদ্ধার করা হয়।

মন্ত্রণালয় প্রকাশিত ছবিগুলোতে দেখা যায়, নম্বরযুক্ত অবস্থায় লাশগুলো স্টিলের ট্রলিতে ও বিছানায় পড়ে আছে। অনেক লাশেই পচন ধরেছে, কিছু লাশ আগুনে পোড়ানো। মৃতদের পরিচয় শনাক্তে তদন্ত চলছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘এখন পর্যন্ত ২৩টি লাশ পরীক্ষা করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী তথ্য নথিভুক্তকরণ এবং নমুনা সংগ্রহ সম্পন্ন হয়েছে।’

উল্লেখ্য, আবু সালিম এলাকাটি ‘স্ট্যাবিলাইজেশন সাপোর্ট অ্যাপারেটাস (এসএসএ)’ নামের একটি শক্তিশালী মিলিশিয়ার ঘাঁটি ছিল। এর প্রধান আবদুলগানি কিকলি, যিনি ‘ঘানিওয়া’ নামে পরিচিত ছিলেন, গত সোমবার রহস্যজনকভাবে নিহত হন।

ঘানিওয়ার মৃত্যুর পর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রধানমন্ত্রী আবদুলহামিদ আল-দ্বেইবাহর নেতৃত্বাধীন সরকারঘনিষ্ঠ বাহিনীর হাতে এসএসএ হঠাৎই পরাজিত হয়। পরদিন মঙ্গলবার দ্বেইবাহ মিলিশিয়াগুলোর বিলুপ্তির নির্দেশ দেন, যার ফলে ত্রিপোলিতে বছরের সবচেয়ে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়। জাতিসংঘ জানায়, সংঘর্ষে অন্তত আটজন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে।

এটি সাম্প্রতিক সময়ে আবিষ্কৃত দ্বিতীয় অজ্ঞাত লাশ উদ্ধারের ঘটনা। গত শনিবার একই এলাকার এসএসএ-নিয়ন্ত্রিত আল-খাদরা হাসপাতালে একটি হিমঘর থেকে আরো নয়টি লাশ পাওয়া যায়।
এই লাশগুলোর কথাও মিলিশিয়া কর্তৃপক্ষকে জানায়নি।

প্রধানমন্ত্রী দ্বেইবাহ শনিবার বলেন, ‘মিলিশিয়া নির্মূল একটি চলমান প্রকল্প।’ গত সপ্তাহের সংঘর্ষের পর বর্তমানে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে।

সোমবার জিএনইউ (গভরমেন্ট অফ ন্যাশনাল ইউনিটি) একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে যেখানে দেখা যায়, এসএসএ-এর অন্যতম বৃহৎ ঘাঁটি ‘৭৭ ক্যাম্প’ বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই ক্যাম্পটি একটি জাতীয় উদ্যানে রূপান্তর করার পরিকল্পনা রয়েছে।

২০১১ সালে নেটো-সমর্থিত বিদ্রোহের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে অপসারণের পর থেকে লিবিয়ায় স্থিতিশীলতা প্রায় অনুপস্থিত। ২০১৪ সালে দেশটি পূর্ব ও পশ্চিম ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে, যদিও ২০২০ সালের একটি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে বড় আকারের সংঘর্ষ কিছুটা স্থগিত হয়।

এসএম/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বাংলাদেশের 'মন তরঙ্গ' এবার বিশ্ব মঞ্চে Nov 20, 2025
img
ইতালি যাওয়ার পথে গোপালগঞ্জের ২ যুবকের মৃত্যু Nov 20, 2025
img

ত্রিদেশীয় সিরিজ

লঙ্কানদের ৬৭ রানে হারিয়ে বড় জয় জিম্বাবুয়ের Nov 20, 2025
img
নির্বাচন বন্ধের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হবে : আমানউল্লাহ আমান Nov 20, 2025
img
তেল ও গ্যাস অন্বেষণে সমুদ্রে কৃত্রিম দ্বীপ বানাবে পাকিস্তান Nov 20, 2025
img
বিএনপি ধর্ম বেচে রাজনীতি করে না : শামা ওবায়েদ Nov 20, 2025
img
সোনম কাপুরের বেবি বাম্প দেখে অদ্ভুত প্রতিক্রিয়া স্বামীর! Nov 20, 2025
কঠিন কাজটাই সহজ করে দিয়েছে হামজা-শমিতরা Nov 20, 2025
বেবি বাম্পের ছবি পোস্ট করে খুশির বার্তা সোনমের Nov 20, 2025
img
জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান ইরানের Nov 20, 2025
img
করাচির রহস্যময় অভিযান নিয়ে সিনেমা ধুরন্ধর Nov 20, 2025
ঢাকা ৮ আসন থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করলেন রিকশা চালক! Nov 20, 2025
img
চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে চুক্তির সব কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের Nov 20, 2025
বিভিন্ন দাবি আদায়ে শিবিরের মাত্র ১৫–২০ জনের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন! Nov 20, 2025
যেই ৪টা কারণে রিযিক কমে যায় Nov 20, 2025
img
নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সবার নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে : সারজিস Nov 20, 2025
img
শীত কবে থেকে বাড়তে পারে, আবহাওয়া অফিসের নতুন বার্তা Nov 20, 2025
img
অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টে অনফিল্ড আম্পায়ারের ভূমিকায় সৈকত Nov 20, 2025
img
সেনা আদেশে হস্তক্ষেপকারী ডেমোক্র্যাটদের মৃত্যুদণ্ড চান ট্রাম্প Nov 20, 2025
img
প্রস্রাব করা নিয়ে দ্বন্দ্বে প্রাণ গেল বিএনপি নেতার Nov 20, 2025