জেমস মনরো: দক্ষ কূটনীতিক থেকে দক্ষ প্রেসিডেন্ট

জেমস মনরো। ছিলেন উনিশ শতকের প্রথমার্ধের আমেরিকার একজন সফল কূটনীতিক। যিনি পরবর্তীতে দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার গৃহীত পররাষ্ট্রনীতি ‘মনরো ডকট্রিন’ নামে পরিচিত, যা মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির বিবর্তনের মাইলফলক।

মনরো ১৭৫৮ সালের ২৮ এপ্রিল ওয়েস্টমোরল্যান্ড কাউন্টিতে জন্মগ্রহণ করেন। আমেরিকান বিপ্লবের প্রথম কয়েক বছর তিনি সেনাবাহিনীতে কাজ করেন। পরবর্তীতে ভার্জিনিয়ার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন এবং প্রেসিডেন্ট জেফারসনের পৃষ্ঠপোষকতায় জাতীয় রাজনীতির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। ১৭৮৬ সালে তিনি এলিজাবেথ কর্টরাইটকে বিয়ে করেন।

ভার্জিনিয়ার সিনেটর হিসেবে জেমস মনরো কেন্দ্রীকরন নীতির বিরোধিতা করেন এবং হ্যামিল্টনের সংস্কার নীতির কঠোর সমালোচক ছিলেন। তিনি ১৭৯৪ সালে ফ্রান্সে রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হন। ১৭৯৬ সালে তার সংগ্রামময় কূটনৈতিক জীবনের অবসান ঘটে। পরে ১৭৯৯-১৮০২ পর্যন্ত তিনি ভার্জিনিয়ার গভর্নরের দায়িত্ব পালন করেন।

১৮০৩ সালে প্রেসিডেন্ট জেফারসন লুইসিয়ানা অঙ্গরাজ্য ক্রয় করতে আলোচনার জন্য তাকে নিযুক্ত করেন। ১৮০৮ সালে তিনি মেডিসনের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীতার বিরোধিতা করে ব্যর্থ হন। যদিও পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট মেডিসনের আহবানেই তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। ১৮১৬ সালে তিনি ফেডারেলিস্ট রউফাস কিংকে পরাজিত করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। পরে ১৮২০ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

তিনি মেডিসন কর্তৃক গৃহীত হ্যামিল্টনিয়ান অর্থনৈতিক সংস্কারনীতি অব্যাহত রাখেন। তাঁর প্রশাসনকে তিনি ‘উত্তম অনুভূতির যুগ’ হিসেবে অভিহিত করেন। ১৮২৩ সালে তিনি ‘মনরো ডকট্রিন’ পররাষ্ট্রনীতির প্রণয়ন করেন, যাতে বলা হয় আমেরিকা যেকোন ধরণের ঔপনিবেশিক হস্তক্ষেপ প্রতিহত করবে এবং অন্যরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্ব পর্যন্ত মনরো ডকট্রিন ছিলো আমেরিকার অন্যতম পররাষ্ট্রনীতি।

১৮৩১ সালের ৪ঠা জুলাই তৃতীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসে মারা যান এ মহান নেতা। 

 

টাইমস/এএইচ/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আতিফ আসলামের স্থগিত হওয়া কনসার্ট নিয়ে এলো সুখবর Dec 21, 2025
img
বেগুনি রঙের পোশাকে নজর কাড়লেন চিত্রনায়িকা বুবলী Dec 21, 2025
img
দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে হুমকি Dec 21, 2025
img
ফিফার সেরা একাদশে রাফিনিয়া না থাকায় ক্ষুব্ধ ফ্লিক Dec 21, 2025
img
চট্টগ্রামের অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী বুইশ্যা আটক Dec 21, 2025
img
হাদির সমাধিস্থল নিয়ে ছড়িয়ে পড়া ছবিটি বানোয়াট-উদ্দেশ্যপ্রণোদিত : ডিএমপি Dec 21, 2025
img
বানারীপাড়ায় কেন্দ্রীয় আ. লীগ নেতা ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম গ্রেপ্তার Dec 21, 2025
img
শহীদ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত করলেন জকসুর শিবির প্যানেল Dec 21, 2025
img
টেস্টের ইতিহাসে প্রথমবার দুই ইনিংসেই জোড়া সেঞ্চুরির রেকর্ড Dec 21, 2025
img
অ্যাভাটারে গান গেয়ে মাইলি সাইরাসের হাতে উঠছে আন্তর্জাতিক সম্মাননা Dec 21, 2025
img
৩ বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে সিইসি Dec 21, 2025
img
৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে লম্বা সময় গোলহীন ভিনিসিয়ুস Dec 21, 2025
img
সারা দেশে তাপমাত্রা কমবে ৩ ডিগ্রি, বাড়বে শীতের তীব্রতা Dec 21, 2025
img

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে ৯ জনের টটেনহ্যামকে ২-১ গোলে হারাল লিভারপুল Dec 21, 2025
img
ছায়ানটে হামলার ঘটনায় সাড়ে ৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা Dec 21, 2025
img
ফের ইরানে হামলার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল Dec 21, 2025
img
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ম্যাক্রোঁর সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন পুতিন Dec 21, 2025
img
জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপে আদি মহাবিশ্বের দানবীয় নক্ষত্রের সন্ধান Dec 21, 2025
img
আজ ২১ ডিসেম্বর: নাটোর হানাদার মুক্ত দিবস Dec 21, 2025
img
আজ শেষ হচ্ছে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র বিতরণ Dec 21, 2025