আর কয়েক দিনের মধ্যেই শুরু হচ্ছে হজের আনুষ্ঠানিকতা। এরই মধ্যে সৌদি আরবে পৌঁছেছেন লাখ লাখ হজযাত্রী, অনেকে রয়েছেন পথের মধ্যে।
চরম গরমের মুখে পড়তে যাচ্ছে তারা, কারণ বর্তমানে সৌদি আরবে চলছে প্রচণ্ড গ্রীষ্মকাল। দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, হজের সময় তাপমাত্রা থাকবে ৪০ থেকে ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।
এই প্রেক্ষাপটে হজযাত্রীদের আরাম নিশ্চিত করতে প্রতিদিন ১০ লাখ টন পানি সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি সরকার।
শুক্রবার (৩১ মে) দেশটির জাতীয় পানি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হজের শুরুর দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত মিনা, আরাফাত, মুজদালিফা এবং কাবায় অবস্থানকারী মুসল্লিদের জন্য প্রতিদিন ১০ লাখ টন পানি সরবরাহ করা হবে; আর এ কাজে পানি পরিষেবা দপ্তরকে সহযোগিতা করবে সৌদির পরিবেশ মন্ত্রণালয় এবং পানি ও কৃষি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
মরু আবহাওয়া হওয়া সৌদি আরবে এমন কোনো স্বাদু পানির জলাশয় নেই, যেখানে সারা বছর পানি থাকে। পান করা এবং দৈনন্দিন কাজে ব্যবহারের জন্য দেশটিকে নির্ভর করতে হয় সাগরের ওপর। সাগরের লোনা পানি থেকে লবণ দূর করে তা পানযোগ্য করে তোলা হয়।
বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা লাখ লাখ হজযাত্রী ও নিজেদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন সাগর থেকে ৭ লাখ ৫০ হাজার টন পানি সংগ্রহ ও লবণমুক্ত করে সরবরাহ করছে সৌদির সরকার। হজের দিনগুলোতে এই উৎপাদন ও সরবরাহের পরিমাণ ১০ লাখ টনে উন্নীত করা হবে।
সৌদির জন্য অবশ্য ব্যাপারটি খুব কঠিন না হলেও খানিকটা চ্যালেঞ্জিং। কারণ পানি পরিষেবা দপ্তরের কর্মকর্তাদের মতে, বর্তমানে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১০ লাখ ২০ হাজার লিটার পানি উৎপাদন ও সরবরাহের সক্ষমতা রয়েছে পরিষেবা দপ্তরের। কর্মকর্তারা অবশ্য জানিয়েছেন যে হজের সময় পানির সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখতে একটি বিশেষ টিম করা হয়েছে। সেই টিমে ২ হাজারেরও বেশি প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ান রয়েছেন। তাছাড়া হজযাত্রীদের জন্য যে পানি সরবরাহ করা হবে, তার মান পরীক্ষা করার দায়িত্বে রয়েছে ৪ হাজারেরও বেশি ল্যাবরেটরি।
হজযাত্রীদের বিশ্রামের জন্য কাবাসহ অন্য সব ধর্মীয় স্থানের আশেপাশে ৩২ হাজারেরও বেশি বিশ্রামাগার তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি বিশ্রামাগারে মিলবে পানি।
ইসলাম ধর্মের ৫টি স্থম্ভের মধ্যে হজ অন্যতম। প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলিম নারী-পুরুষের জন্য জীবনে অন্তত একবার হজ করা ফরজ। এ কারণে প্রতি বছর হজের মৌসুমে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখ লাখ মুসল্লি সৌদিতে আসেন।
চলতি বছর হজ শুরুর সম্ভাব্য তারিখ ৪ জুন। সূত্র : গালফ নিউজ
আরএ/এসএন