প্রিয়া সাহা জঘন্য মিথ্যাচার করেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, প্রিয়া সাহা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে যে অভিযোগ করেছেন, তা একেবারেই মিথ্যা। বিশেষ মতলবে এমন উদ্ভট কথা বলেছেন তিনি। আমি এমন আচরণের নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে এক সমাবেশে যোগ দেয়ার পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী ‘ধর্মীয় স্বাধীনতায় অগ্রগতি’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ওই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে গত বুধবার হোয়াইট হাউসে গিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ওই অভিযোগ করেন প্রিয়া সাহা।

তার বক্তব্য ছিল, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা মৌলবাদীদের নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নিখোঁজ হয়েছেন।

ওই সম্মেলনে বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্যে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহার অভিযোগ বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করে।

প্রিয়া সাহার অভিযোগের প্রেক্ষিতে আবুদল মোমেন বলেন, বাংলাদেশে সরকারি কর্মচারীদের ২৫ শতাংশ হচ্ছে ধর্মীয়ভাবে সংখ্যালঘু, যদিও তারা মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশ।

তিনি বলেন, ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের প্রকৃত পরিস্থিতির ওপর আলোকপাত করেছেন। তাই প্রিয়া সাহার বক্তব্য যে অন্তঃসারশূন্য এবং বিশেষ উদ্দেশ্যে জঘন্য মিথ্যাচার, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ ধরনের অভিযোগে প্রকান্তরে শান্তিপূর্ণ সমাজে বিশৃঙ্খলা উস্কে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ তা কখনও হতে দেবে না।

প্রিয়া সাহার স্বামী মলয় সাহা দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা। তার দুই সন্তান পড়াশোনা করছেন যুক্তরাষ্ট্রে।

ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক ‘হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশন’র কর্মকর্তা জয় ক্যানসারার উদ্যোগে প্রিয়া সাহা যুক্তরাষ্ট্রে এই সম্মেলনে আসেন। তবে জয় ক্যানসারার মাধ্যমেও প্রিয়া সাহার সঙ্গে কথা বলা যায়নি।

বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, তাদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশে ‘সংখ্যালঘু নিপীড়নের’ যে অভিযোগ করেছেন তা একান্তই তার নিজস্ব বক্তব্য, সংগঠনের নয়।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ শাহরিয়ার আলম ওই অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ওই নারী কেন এটা করেছেন তা তিনি খতিয়ে দেখবেন।

আর যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার বলেছেন, আট মাসের অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশে যে ধর্মীয় স্বাধীনতা তিনি দেখেছেন তা বিশ্বের জন্য ‘দৃষ্টান্ত’ হতে পারে।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: