সাবেক ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বীকার করেছেন, ৫ আগস্ট সকাল থেকে ঢাকায় জনস্রোতের মতো মানুষের ঢল নামার যে অভাবনীয় দৃশ্য দেশ দেখেছে, তা তারা আগেভাগে আঁচ করতে পারেননি। এমনকি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকেও যথাযথ তথ্য সরবরাহ করা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে ওবায়দুল কাদের বলেন, “৫ আগস্টের ঘটনার আকার ও বিস্ফোরণ আমরা কল্পনাও করতে পারিনি। এত অর্গানাইজড ও পরিকল্পিতভাবে কিছু হবে, সেটা আমাদের ধারণার বাইরে ছিল।”
তিনি জানান, আগের দিন ৪ আগস্ট রাতেই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। সেখানে কিছু বাহিনীর পক্ষ থেকে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সম্ভাবনার ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছিল। “আভাস অবশ্যই ছিল,” বলেন কাদের।
“তবে সবার অভিমত একরকম ছিল না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সেনাবাহিনী, সিভিল প্রশাসন, আমাদের দলের মন্ত্রী-এমপিদের নিয়ে বিষয়টি আলোচনায় আসে। কিন্তু বিষয়টি সরকার পতনের দিকে চলে যাবে— সেটা আমরা কেউ ভাবিনি।”
তিনি স্পষ্ট বলেন, “আমরা পরিস্থিতি অনুধাবন করেছিলাম, কিন্তু তা যে সরকারের পতনের পর্যায়ে যাবে, তা অনুমান করতে পারিনি।”
ওবায়দুল কাদের মনে করেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সেই বাস্তবতা যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
তবে তিনি জানান, “আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছি, চর্চা করছি, ভুল-ত্রুটির বিশ্লেষণ করছি। এখন ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের নতুন করে সংগঠিত করার চেষ্টা চলছে।”
দেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “যখন দেশের অভ্যন্তরে শান্তি ও স্থিতি ফিরে আসবে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হবে, তখন আমরা এ বিষয়ে চিন্তা করবো।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “দেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে আমরা কখনোই পিছিয়ে নেই। প্রয়োজন হলে আমরা দায় স্বীকার করতেও প্রস্তুত।”
আরএম