আইসিসির ‘হল অব ফেম’-এ জায়গা পেলেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। সোমবার (৯ জুন) এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে আইসিসি। ধোনি ছাড়াও এ দিন আরও ৬ ক্রিকেটারকে ‘হল অব ফেম’-এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছ।
অবসর নেওয়ার পাঁচ বছর পর এই সম্মাননা পেলেন ধোনি। ইতিমধ্যে ‘হল অব ফেম’-এ ছিলেন ভারতের ১০ ক্রিকেটার। তাদের মধ্যে দু’জন নারী ক্রিকেটার ও ৮জন পুরুষ ক্রিকেটার। নতুন করে যুক্ত হয়েছে ধোনির নাম।
এর আগে ২০০৯ সালে প্রথম ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ‘হল অব ফেম’-এ জায়গা পান সুনীল গাভাস্কার ও বিষান সিং বেদী। এরপর এ তালিকায় যুক্ত হয় কপিল দেব, অনিল কুম্বলে, রাহুল দ্রাবিড়, শচীন টেন্ডুলকার, বিনু মাঁকড়, ডায়না এডুলজি ও নীত ডেভিড-এর নাম।
আইসিসির ওয়েবসাইটে ধোনি বলেছেন, ‘হল অব ফেম সুযোগ পেয়ে আমি আপ্লুত। গোটা বিশ্বে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ক্রিকেটাররা যে অবদান রাখে, তার স্বীকৃতি জানানো হয় এই সম্মানের মাধ্যমে। সর্বকালের সেরাদের পাশে নিজের নাম দেখতে পাওয়া অসাধারণ অনুভূতি। সারাজীবন এই সম্মান মনে রাখবো।’
২০০৪ সালে ভারতের হয়ে অভিষেক হয় ধোনির। তিন বছর পর টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্বের দায়িত্ব পান। এরপর টেস্ট এবং এক দিনের ক্রিকেটে সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, এক দিনের বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপার স্বাদ পেয়েছেন ধোনি। ভারতকে দু’বার এশিয়া কাপ জিতিয়েছেন। এক দিনের ফরম্যাটে দু’বার আইসিসি-র বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কারও পেয়েছেন।
ভারতের হয়ে ৩৫০টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে ধোনি রান করেছেন ১০ হাজার ৭৭৩। ৯০টি টেস্ট খেলে করেছেন ৪ হাজার ৮৭৬ রান।
এ দিন ধোনির সঙ্গেই আইসিসি-র ‘হল অব ফেম’-এ জায়গা পেয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথু হেইডেন, নিউজিল্যান্ডের ড্যানিয়েল ভেট্টোরি, দক্ষিণ আফ্রিকার হাশিম আমলা, গ্রায়েম স্মিথ এবং দুই নারী ক্রিকেটার পাকিস্তানের সানা মীর ও ইংল্যান্ডের সারাহ টেলর।
এ তালিকায় নাম আছে অস্ট্রেলিয়ার বহু ক্রিকেটারের। চলতি বছর অস্ট্রেলিয়ার তিন ক্রিকেটার জায়গা পেয়েছেন হল অব ফেম-এ। তারা হলেন- মাইকেল ক্লার্ক, মাইকেল বেভান ও ক্রিস্টিয়ানা ম্যাথিউস। নতুন করে যুক্ত হলো ম্যাথু হেইডেনের নাম। অস্ট্রেলিয়ার একজন বিধ্বংসী ওপেনার ছিলেন হেইডেন। অজিদের হয়ে দুবার বিশ্বকাপও জিতেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।
নিউজিল্যান্ডের চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে হল অব ফেম-এ জায়গা পেলেন ড্যানিয়েল ভেট্টোরি। এর আগে এ তালিকায় নাম লিখিয়েছেন রিচার্ড হ্যাডলি, মার্টিন ক্রো এবং নারী ক্রিকেটার ডেবি হকলে। এবার নতুন করে এ তালিকায় যুক্ত হলো ভেট্টোরির নাম।
দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ক্রিকেটার হাশিম আমলা ও গ্রায়েম স্মিথ জায়গা পেয়েছেন এ তালিকায়। জাতীয় দলের হয়ে ক্যারিয়ারে ১২৪টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন হাশিম আমলা। রান করেছেন ৯ হাজার ২৮২। ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন ১৮১টি। ৪৯.৪৬ গড়ে রান করেছেন মোট ৮ হাজার ১১৩। এ ছাড়া ৪৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে রান করেছেন ১ হাজার ২৭৭।
দক্ষিণ আফ্রিকার জার্সিতে ১১৭টি টেস্ট খেলেছেন গ্রায়েম স্মিথ। ৪৮.২৫ গড়ে রান করেছেন মোট ৯ হাজার ২৬৫। নামের পাশে উইকেট আছে ৮টি। ওডিআই ম্যাচ খেলেছেন ১৯৭টি। ৩৭.৯৮ গড়ে মোট ৬ হাজার ৯৮৯ রান করেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। এ ছাড়া উইকেট শিকার করেছেন ১৮টি। ৩৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে তার মোট রান ৯৮২।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে মোট ১১৩টি টেস্ট খেলেছেন ড্যানিয়েল ভেট্টোরি। ৩০.০০ গড়ে তার মোট রান ৪ হাজার ৫৩১। উইকেট শিকার করেছেন ৩৬২টি। ২৯৫ ওয়ানডে ম্যাচ খেলে রান করেছেন মোট ২ হাজার ২৫৩, উইকেট নিয়েছেন ৩০৫টি। এ ছাড়া ৩৪টি টি-টোয়েন্টি খেলে ৩৮ উইকেট শিকার করেছেন বাঁহাতি এই স্পিনার, রান করেছেন মোট ২০৫।
পাকিস্তানের নারী ক্রিকেটার সানা মীর জাতীয় দলের হয়ে মোট ১২০টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। ১৭.৯১ গড়ে তার মোট রান ১ হাজার ৬৩০, পাশাপাশি উইকেট শিকার করেছেন ১৫১টি। টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন ১০৬টি। ৮৯ উইকেট শিকারের পাশাপাশি রান করেছেন ৮০২।
আরেক নারী ক্রিকেটার সারাহ টেইলর ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্ট খেলেছেন ১০টি। রান করেছেন ৩০০, উইকেটের পেছনে গ্লাভস হাতে ডিসমিসাল করেছেন ২০টি। ১২৬টি ওডিআই ম্যাচ খেলে সারাহ রান করেছেন মোট ৪হাজার ৫৬। আর ৯০টি টি-টোয়েন্টি খেলে তার রান ২ হাজার ১৭৭।