পরিবারসহ আওয়ামী লীগ নেতা পিকুলের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা

যশোর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুজ্জামান পিকুল, তার স্ত্রী শেফালী জামান এবং দুই ছেলে তানজীব নওশাদ পল্লব ও তানভীর নওশাদ অর্ণবের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত।

রবিবার (১৫ জুন) দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন যশোরের সিনিয়র স্পেশাল জজ (জেলা জজ) নাজমুল আলম।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে মামলাটি পরিচালনাকারী আইনজীবী আশরাফুল আলম বিপ্লব।

দুদক সূত্রে জানা যায়, সাইফুজ্জামান পিকুল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালে বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেন।

সড়ক ও মহাসড়কের গাছ বিক্রির টাকা আত্মসাৎ, নিয়োগ বাণিজ্য, জমি ইজারা এবং দোকান বরাদ্দের অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব অবৈধ অর্থ দিয়ে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ মিলেছে।

এ দিকে জানা গেছে, পিকুলের বড় ছেলে তানজীব নওশাদ পল্লব ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ ঘোষিত যশোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গত বছরের ২৩ আগস্ট তিনি বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হন।

পরবর্তীতে জামিনে মুক্তি পেয়ে তিনি পুনরায় গা ঢাকা দেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

প্রধান অভিযুক্ত পিকুল শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরপরই দেশত্যাগ করেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার স্ত্রী ও ছোট ছেলে তানভীর অর্ণব কোথায় অবস্থান করছেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি। তবে তারা দীর্ঘদিন ধরে যশোরে অনুপস্থিত রয়েছেন।

দুদকের যশোর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন জানান, কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে সাইফুজ্জামান পিকুল ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। মামলার স্বার্থে গত ২৯ মে আদালতে তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করা হয়, যা আজ অনুমোদন পায়।

প্রসঙ্গত, পিকুল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালে যশোর জেলার বিভিন্ন সড়কের গাছ কেটে বিক্রি করেন এবং এ অর্থ ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করেন। এ কারণে যশোরবাসীর কাছে তিনি 'গাছখেকো পিকুল' নামেই বেশী পরিচিত।

আরএম/টিএ   

Share this news on:

সর্বশেষ

img
এরদোয়ানের সঙ্গে ছবি নিয়ে বিতর্কের বিষয়ে যা জানালেন আমির খান Jun 16, 2025
img
সিলেটে দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ করায় ১৫৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা Jun 16, 2025
img
চলতি বছর থেকেই চালু হতে পারে রূপপুরের প্রথম ইউনিট Jun 16, 2025
img
ঢাকায় পৌঁছেছেন জাতিসংঘের গুমবিষয়ক প্রতিনিধি দল Jun 16, 2025
img
বিএনপি দুর্বল নয়, এই দল পুলিশের ভোটে সরকার গঠন করতে চায় না: জি কে গউছ Jun 16, 2025
img
মোস্তফা মোহসীন মন্টুকে নিয়ে এনসিপির শোকবার্তা Jun 16, 2025
img
ইসরায়েলের দিকে ছুটে যাচ্ছে ইরানের মিসাইল Jun 16, 2025
img
বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে ইরানের ফোর্দো পরমাণু কেন্দ্রে Jun 16, 2025
img
‘দখলকৃত অঞ্চল ছাড়ো, এগুলো বাসযোগ্য থাকবে না’ Jun 16, 2025
img
ইরানে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ Jun 16, 2025
img
পিএসজির কাছে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত অ্যাতলেটিকো Jun 16, 2025
img
আরও বেদনাদায়ক জবাব অপেক্ষা করছে : ইরানের প্রেসিডেন্ট Jun 16, 2025
img
নেতানিয়াহুর বাড়ি লক্ষ্য করে ৫০ টি ক্ষেপণাস্ত্র চালাল ইরান Jun 16, 2025
img
ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অস্বীকৃতি জানাল ইরান Jun 16, 2025
img
গোয়েন্দা প্রধানের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করল ইরান Jun 16, 2025
img
‘নিজেদের ছাড়া কাউকে ভরসা করা যাবে না’ Jun 16, 2025
img
‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বহুদলীয় গণতন্ত্রের মৌলিক উপাদান’ Jun 16, 2025
img
সিনেমা না করেও ইনস্টাগ্রামে সক্রিয় থেকেই তারকাখ্যাতি Jun 16, 2025
img
‘পার্বত্য অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কোনোভাবেই বিনষ্ট করা যাবে না’ Jun 16, 2025
img
সাত দিনেই মুখ থুবড়ে পড়ল কমল হাসানের ‘থাগ লাইফ’ Jun 16, 2025