বাংলাদেশের ব্যাংক খাত সংস্কারে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ৫০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৬ হাজার ১৫০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা হিসেবে)। এই ঋণ দিয়ে ব্যাংক খাতের মূলধন কাঠামো শক্তিশালী করা, ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা, স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সক্ষমতা গড়ে তোলার কাজে ব্যয় হবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় অবস্থিত এডিবির সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় এই ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের দুর্বল সম্পদ গুণমান, তারল্য সংকট ও সীমিত আর্থিক অন্তর্ভুক্তিই বড় বাধা। এই কর্মসূচি তা দূর করতে সাহায্য করবে। কিছু দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণের আলোচনার মধ্যেই কম সুদের এ ঋণ অনুমোদন হলো।
এডিবি জানিয়েছে, নিয়ন্ত্রক তত্ত্বাবধান, কর্পোরেট সুশাসন, সম্পদের মান এবং স্থিতিশীলতা জোরদার করে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতকে স্থিতিশীল ও সংস্কার করার জন্য নীতি-ভিত্তিক এ ঋণ অনুমোদন হয়েছে।
ম্যানিলা থেকে পাঠানো এডিবির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ও সংস্কার কর্মসূচি, ব্যাংকিং খাতের সুশাসন বৃদ্ধি, বাংলাদেশ ব্যাংকের তারল্য ব্যবস্থাপনা কাঠামোর কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে এ তহবিল ব্যয় করা হবে। ব্যাংকিং ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য খেলাপি ঋণ সমস্যার সমাধানের জন্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য নীতিগত সংস্কারের কাজ করবে এই ঋণ। এডিবির কর্মসূচির আওতাধীন পদক্ষেপগুলো আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং নিয়মগুলোর সঙ্গে পর্যায়ক্রমে সম্মতি সমর্থন করবে। যার ফলে সম্পদের মানে স্বচ্ছতা আসবে।
এডিবির প্রধান আর্থিক খাত বিশেষজ্ঞ সঞ্জীব কৌশিক বলেন, ব্যাংকিং খাতে মূল সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে শক্তিশালী সম্পদের মানের অভাব, তারল্য সংকট এবং দুর্বল আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ। এসবের ফলে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির হার কম। এডিবি অর্থায়নের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে চলা নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সক্ষমতা গড়ে তোলার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংকিং খাতের মূলধন বৃদ্ধি ও শক্তিশালী করা হবে। এছাড়া ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য সহজে অর্থায়ন করা হবে। যা আর্থিক খাতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এডিবির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশের কার্যকর আর্থিক মধ্যস্থতা প্রয়োজন, যা ব্যবসায়িক উদ্যোগগুলোকে ঋণ পেতে এবং ব্যাংকিং খাত থেকে আর্থিক পরিষেবা পেতে সহায়তা করতে পারে। ব্যাংকিং খাত ঐতিহ্যগতভাবে শিল্প খাত এবং ঋণ যোগ্য ঋণগ্রহীতাদের নিয়ে কাজ করে। যেখানে জনসংখ্যার একটি বড় অংশ প্রাথমিকভাবে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল। ডিজিটাল অবকাঠামোসহ ব্যাংকিং খাতকে শক্তিশালী করা দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের উৎস প্রদানে সহায়তা করবে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি সক্ষমতা বাড়াবে।
এসএন