ইরান ইস্যুর ফাঁকে গাজায় ৯২ ফিলিস্তিনি হত্যা

ইরানের সঙ্গে সংঘাতের দিকে বিশ্ববাসীর নজর টেনে নিয়ে গাজায় গণহত্যা জোরদার করেছে ইসরাইল। গেল ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় আরও ৯২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন দুই শতাধিক।

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) গাজার মধ্যাঞ্চলে মানবিক সহায়তার জন্য অপেক্ষারত ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। ড্রোন, ট্যাংক ও মেশিনগান হামলায় মুহূর্তেই ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যারা ত্রাণের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিল, তাদেরই টার্গেট করে চালানো হয় নির্বিচার গোলাবর্ষণ। ঘটনাস্থল ছিল একটি মার্কিন ও ইসরাইলি সমর্থিত সংস্থার ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের আশপাশে।

সংস্থাটি হামলার কথা অস্বীকার করলেও স্থানীয় চিকিৎসক ও উদ্ধারকর্মীরা বলছেন, সেখানে প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবারও ত্রাণের জন্য ভিড় করেছিলেন সাধারণ মানুষ। ইসরাইলি সেনারা তাদের ‘সন্দেহভাজন’ আখ্যা দিয়ে গুলি ছোড়ে। এমন ঘটনা এখন গাজায় প্রায় নিয়মিত।

গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালে প্রিয়জনের মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনেরা। ইসরাইলি বিমান হামলায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের অনেকেই ছিলেন বাস্তুচ্যুত নারী ও শিশু। হাসপাতালে বিলাপ করতে থাকনে স্বজনহারা মানুষ। হতাহতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় সংকটে পড়েছে হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থাও।

শুধু গাজা নয়, দমন-পীড়ন চলছে দখলকৃত পশ্চিম তীরেও। ইসরাইলি বাহিনী সেখানে কঠোর লকডাউন জারি করেছে। বাড়ি বাড়ি তল্লাশি, রাতভর অভিযান এবং গণগ্রেফতারের কারণে পশ্চিম তীরের জনজীবনও স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, আন্তর্জাতিক মনোযোগ ইরানের দিকে সরে যাওয়ায় ফিলিস্তিনে দমন-পীড়নের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে ইসরাইল।

এদিকে, গাজায় শিশু অপুষ্টি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইউনিসেফ বলছে, ২০২৫ সালের শুরু থেকে প্রতিদিন গড়ে ১১২ শিশু অপুষ্টি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মে মাসেই শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজারের বেশি রোগা শিশুর নাম। নিরাপদ পানি, চিকিৎসা ও পর্যাপ্ত খাদ্যের অভাবে এই শিশুরা মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে।

এফপি/টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আগামীকাল প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে এনসিপি Nov 14, 2025
img
রাতে পার্টি দেয়ার চুক্তিতে বাসে আগুন দিতে রাজি হন ৩ কলেজ শিক্ষার্থী Nov 14, 2025
img
মাগুরায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাণ গেল ২ জনের Nov 14, 2025
img
ওসমান হাদিকে কল ও টেক্সটে হত্যার হুমকি Nov 14, 2025
img
কোটাসহ বেশ কিছু পরিবর্তন এনে স্কুলে ভর্তির নতুন নীতিমালা প্রকাশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের Nov 14, 2025
img
নিউমুরিং টার্মিনাল চুক্তি প্রক্রিয়ার রুল শুনানি ১৯ নভেম্বর Nov 14, 2025
img
মাত্র ২৯ দিনের ব্যবধানে চট্টগ্রামের নতুন ডিসি জাহিদুল Nov 14, 2025
img
দুর্নীতির অভিযোগে ২ মন্ত্রীকে বরখাস্ত করলেন জেলেনস্কি Nov 14, 2025
img
আবার মঙ্গল অভিযানে নাসার দুই মহাকাশযান Nov 14, 2025
img
আজ বিহার বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা, গণনা শুরু Nov 14, 2025
img
বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস আজ Nov 14, 2025
img
পোড়া জিনিস বারবার পুড়িয়ে কি আ. লীগকে দমানো যাবে : মোস্তফা ফিরোজ Nov 14, 2025
img
বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে দিল্লি, দ্বিতীয় ঢাকা Nov 14, 2025
img
মেঘনায় ট্রলার ডুবির ঘটনায় দুই যুবক নিখোঁজ Nov 14, 2025
img
এনসিপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের সময় বাড়ল Nov 14, 2025
img
ট্রাম্পের কাছে তথ্যচিত্রের জন্য ক্ষমা চেয়েছে বিবিসি Nov 14, 2025
img
কুড়িগ্রামের নতুন ডিসি অন্নপূর্ণা দেবনাথ Nov 14, 2025
img
পঞ্চগড়ে শীতের তীব্রতা বাড়ছে, তাপমাত্রা নামলো ১৪ ডিগ্রিতে Nov 14, 2025
img
গাজায় ধ্বংস প্রায় ৩ লাখ বাড়ি, শীতে তাঁবুতেই আশ্রয় নিচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা Nov 14, 2025
img
রাজধানীতে হালকা শীতের আমেজ, সকাল শুরু ১৯ ডিগ্রি তাপমাত্রায় Nov 14, 2025