মোসাদের চুরি করা নথিই কি ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের শিকড়?

২০১৮ সালে তেহরান থেকে পরমাণু কর্মসূচি সম্পর্কিত বিভিন্ন নথি চুরি করেছিল ইসরাইলের বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। ওই ঘটনার পর খুন হতে থাকেন একের পর এক ইরানি পারমাণবিক বিজ্ঞানী। পরীক্ষাগারে বিস্ফোরণ, সাইবার হামলা ও গুপ্তচরবৃত্তির ঘটনায় উত্তপ্ত হতে থাকে তেহরান-তেল আবিব দ্বন্দ্ব।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সাত বছর পর সেই গোপন পারমাণবিক কর্মসূচির নথির জেরেই নতুন করে দেখা দিয়েছে ইরান-ইসরাইল প্রাণঘাতী সংঘাত।

গত এক সপ্তাহ ধরে পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইরান ও ইসরাইল। শুরুতেই ইসরাইল আকস্মিক হামলা চালিয়ে বসে তেহরানের পারমাণবিক স্থাপনায়। কিন্তু হঠাৎ করে ইসরাইল কেন হামলা চালালো এ নিয়ে সামনে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে তেহরানের একটি সুরক্ষিত আর্কাইভে ঢুকে পড়ে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের একটি বিশেষ দল। মাত্র সাড়ে ছয় ঘণ্টার মধ্যে তারা চুরি করে ৫০ হাজার নথি ও ১৬৩টি সিডি। সবই ইরানের গোপন পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি সংক্রান্ত বলে দাবি মোসাদের।

তাদের দাবি, ইরানের লক্ষ্য ছিল বোমা ডিজাইন, ওয়ারহেড উন্নয়ন আর শাহাব থ্রি ক্ষেপণাস্ত্রে ফিটিংয়ের ব্লুপ্রিন্ট।

তিন মাস পর সেই নথি উন্মোচন করেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। বিশ্বমঞ্চে ইরানকে মিথ্যাবাদী আখ্যা দিয়ে তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসনকে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে আসতেও উদ্বুদ্ধ করে ইসরাইল।

যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা গোয়েন্দারা নথি চুরির সত্যতা স্বীকার করে।

দাবি করা হয়, চুক্তির পরও ইরান গোপনে কর্মসূচি চালিয়ে গেছে। যদিও এমনটা বরাবরাই অস্বীকার করেছে তেহরান।

ওই নথি চুরির ঘটনার পর খুন হতে থাকেন একের পর এক ইরানি পারমাণবিক বিজ্ঞানী। গোপন পরীক্ষাগারে বিস্ফোরণ, সাইবার হামলা ও গুপ্তচরবৃত্তির ঘটনায় উত্তপ্ত হতে থাকে তেহরান-তেল আবিব দ্বন্দ্ব। ইরান পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে সক্রিয় করে হিজবুল্লাহ-হামাসসহ আঞ্চলিক নেটওয়ার্ক।

সবশেষ চলতি বছর জুনে ইরানে বিমান ও ড্রোন হামলা চালায় ইসরাইল। ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক ঘাঁটিগুলো গুঁড়িয়ে দেয়ার দাবি করে। ইসরাইলি হামলায় প্রাণ হারান অনেকে। পাল্টা জবাবে তেহরানও শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে, যা আঘাত হানে তেল আবিবসহ বিভিন্ন শহরে। ধারণা করা হচ্ছে, মোসাদের চুরি করা সেসব গোপন নথির জেরেই ফের উত্তজনা তুঙ্গে পৌঁছেছে ইসরাইল-ইরানের মধ্যে।

এফপি/টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ

হলে গিয়ে নাটকের লোকদের দেখব, প্রশ্নই আসে না- ইকবা Jun 20, 2025
ইশরাক হোসেনের ব্যপারে বিএনপিকে যে বার্তা দিতে চায় সরকার Jun 20, 2025
img
প্রেমের অপূর্ব কাব্য ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ ২৬ বছরে Jun 20, 2025
img
ইসরায়েলের গোপন পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে ব্রিটেনের গবেষণা প্রতিবেদন Jun 20, 2025
img
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের সিরিজ জয় দেখছেন শচীন Jun 20, 2025
img
খামেনির উপদেষ্টা আলী শামখানির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল Jun 20, 2025
img
১০ রানের লিড নিয়ে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ Jun 20, 2025
img
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারকে অবশ্যই উদ্যোগী হতে হবে: মির্জা ফখরুল Jun 20, 2025
img
তেহরানসহ তিন ক্ষেপণাস্ত্র কেন্দ্র ধ্বংস, কমান্ডার নিহত: আইডিএফের দাবি Jun 20, 2025
img
অপ্রীতিকর ঘটনার মুখোমুখি সালমান, নিরাপত্তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন Jun 20, 2025
উন্নয়ন বাজেটের অর্ধেকই যাচ্ছে চট্টগ্রামে Jun 20, 2025
চলতে পারবে না ২০ বছরের বেশি পুরোনো বাস-মিনিবাস Jun 20, 2025
img
মুক্তির ১৪ দিনে বক্স অফিস কাঁপাচ্ছে ‘হাউজফুল ৫’ Jun 20, 2025
img
তেহরান থেকে পাকিস্তান হয়ে দেশে ফিরবেন বাংলাদেশিরা Jun 20, 2025
img
হজ শেষে দেশে ফিরেছেন ৩৬ হাজার ৬০১ জন Jun 20, 2025
img
ট্রাম্পের প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ কাদের কাছে জনপ্রিয় Jun 20, 2025
img
শুভ ভাই আমার ক্রাশ : মন্দিরা Jun 20, 2025
সবচেয়ে ‘অপ্রতিরোধ্য’ আকাশ প্রতিরক্ষা এখন ইরানি আঘাতে বিপর্যস্ত Jun 20, 2025
যে কোনো সময় আসতে পারে তারেক রহমানের দেশে ফেরার ঘোষণা Jun 20, 2025
img
কল রেকর্ড করার জন্যই নীলা ফোন করেছিলেন, দাবি তুষারের Jun 20, 2025