ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলায় দেশটির আরেক শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহাম্মদ রেজা সেদিঘি সাবের নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভি।
মঙ্গলবার ( ২৪ জুন) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত এই বিজ্ঞানীকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে, যা ইসরায়েলের চলমান লক্ষ্যবস্তু-ভিত্তিক অভিযানের অংশ।
গত ১২ দিন ধরে ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে বিস্তৃত সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। এতে পারমাণবিক স্থাপনা, শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা, ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি এবং সামরিক গবেষণা কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েল দাবি করছে, এই হামলাগুলোতে একাধিক উচ্চপদস্থ ইরানি পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন।
১০ জনের বেশি বিজ্ঞানী নিহত
কাউন্সিল অন ফরেইন রিলেশনস (সিএফআর) এর সোমবারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১০ জন ইরানি বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন ফারেইদুন আব্বাসি, ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (এইওআই) সাবেক প্রধান এবং আমির হোসেইন ফেকহি সংস্থাটির সাবেক উপপ্রধান।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাভুক্ত বিজ্ঞানী ছিলেন সেদিঘি
মোহাম্মদ রেজা সেদিঘি সাবের ছিলেন প্রতিরক্ষামূলক উদ্ভাবন ও গবেষণা সংস্থা(এসপিএনডি)-এর এক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের প্রধান, যেটি বিস্ফোরক-সম্পর্কিত গবেষণা ও পরীক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ও অর্থ মন্ত্রণালয় চলতি বছরের শুরুতে তাকে এবং তার দলকে পারমাণবিক বিস্ফোরক ডিভাইস তৈরিতে প্রযোজ্য গবেষণার জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
ইসরায়েলের স্বীকৃতি
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে যে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আরেক ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে। যদিও সেখানে সেদিঘি সাবেরের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় আইডিএফ তেহরানের কেন্দ্রে শাসকগোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, শত শত বাসিজ সদস্য (সরকারপন্থী আধা-সামরিক বাহিনী) হত্যা করেছে এবং এক শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে।’
এই হত্যাকাণ্ড ইসরায়েল-ইরান চলমান উত্তেজনার সর্বশেষ ঘটনা। যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসলেও, পাল্টা হামলা ও হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সংঘর্ষ নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। ইরান এই হত্যাকাণ্ডকে সরাসরি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের উদাহরণ হিসেবে দেখছে এবং এর জবাব দেওয়ার প্রস্তুতির কথাও বলেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনাগুলো মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা ফেরানোর যেকোনো চেষ্টার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে।