বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে কোটাপ্রথা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন চত্বরে এ মানববন্ধন করেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে ভর্তিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল না করা হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।
জানা যায়, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিতে প্রক্রিয়ায় কোটায় ভর্তি নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সেখানে পোষ্য কোটা, মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী/উপজাতি কোটা, হরিজন ও দলিত কোটা, খেলোয়াড় কোটা, প্রতিবন্ধী কোটা ও জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ কোটা রাখা হয়েছে।
এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা করছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা ছাড়া বাকি সকল কোটা বাতিলের দাবি জানান।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন রেখে বলেন, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বারবার কোটা বন্ধের যৌক্তিক দাবি জানানোর পরেও বর্তমান প্রশাসন কেন দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে? প্রশাসন কি এতটাই দুর্বল যে এমন একটি অনৈতিক কোটা প্রথা বিলুপ্ত করার সাহসটুকুও তাদের নেই? নাকি কোটা পদ্ধতির সুবিধাভোগী কোনো শক্তিশালী চক্রের কাছে তারা জিম্মি? তাদের এই রহস্যজনক ভূমিকা আজ সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনে তীব্র ক্ষোভ ও অনাস্থার জন্ম দিয়েছে।
তারা কি আসলেই শিক্ষার্থীদের পক্ষে? নাকি কোনো অদৃশ্য শক্তির স্বার্থ রক্ষা করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য? অনতিবিলম্বে ভর্তিতে অযৌক্তিক কোটা বাতিল না করলে আমরা কঠোর আন্দোলন করতে বাধ্য হবো।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘কোটার প্রহসন দূর করতে হবে’, ‘প্রশাসন কি আবারও রক্ত দেখতে চায়’, ‘এই কোটার জন্যই কি রক্ত ঝরালাম’, ‘সারা বাংলায় খবর দে কোটা প্রথার কবর দে’, ‘রক্তাক্ত জুলাই এর সাথে বেইমানি’, ‘কাদের স্বার্থ রক্ষায় এখনো কোটা’, ‘কোটা বিলুপ্তিতে আবারো রক্ত দেব’ লেখাসংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, আমাদের জুলাই অভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল কোটা প্রথার বিরুদ্ধে। কিন্তু এতোগুলো ভাইয়ের শাহাদত বরণের পরেও এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে কীভাবে কোটা প্রথা বহাল থাকে? আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব ধরনের কোটা প্রথার বিলুপ্তি চাই।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ও পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা রাখা রেখে অন্য কোটা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। যদি কোটা বাতিল করা না হয় তাহলে আগামী দিনে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। প্রয়োজনে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন বন্ধ করে দেবো। আগামীকালের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
কেএন/টিকে