মিথ্যা মামলা ও এ ধরনের মামলায় গ্রেফতার সমাজের সব স্তরে উদ্বেগ তৈরি করেছে। মামলায় নির্দোষ মানুষকেও আসামি করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সরকার মিথ্যা মামলা ও এ মামলায় গ্রেফতার থামাতে নতুন বিধান করছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) এবং জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ-সংক্রান্ত কার্যালয় (ইউনাইটেড নেশন্স অফিস অন ড্রাগ অ্যান্ড ক্রাইম-ইউএনওডিসি) আয়োজিত এক সংলাপে এসব কথা জানান তিনি।
সংলাপ উদ্বোধনের পর তিনটি আলাদা অধিবেশন হয়। প্রতিটি অধিবেশনের পর বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিচার সংস্কার কমিশন, বার কাউন্সিল, পুলিশ, এনজিও এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন।
বিআইআইএসএসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিসের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইউএনওডিসির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের উপপ্রতিনিধি ড. সুরুচি প্যান্ট। সংস্থার বাংলাদেশ কার্যালয়ের প্রধান ফেলিপে রামোস সংলাপের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘মিথ্যা মামলা ও অযৌক্তিক গ্রেফতার কমাতে আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিধান আনছি। এখনই সব খুলে বলছি না। তবে এতটুকু বলতে পারি, মিথ্যা মামলা ও অযাচিত গ্রেফতারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। কিছুটা হলেও এসব কমবে বলে আশা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রথমবারের মতো ছেলে শিশুদের যৌন নির্যাতনকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছি। গুমের ওপর একটি নতুন আইন প্রক্রিয়াধীন এবং আমরা এটিকে গুম-সংক্রান্ত কনভেনশনের সঙ্গে যতটা সম্ভব সামঞ্জস্যপূর্ণ করার চেষ্টা করছি।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘মামলাজট কমাতে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসগুলোকে শক্তিশালী করা হচ্ছে। আগে যেখানে প্রতি জেলায় একজন লিগ্যাল এইড অফিসার থাকতেন, এখন তিনজন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’
সরকার ইতোমধ্যে মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহারের সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে, যা প্রায় তিন লাখ মানুষের জীবনকে বিপদে ফেলেছে। আগামী ছয় মাসে আরও ২০ হাজার মামলা প্রত্যাহার করা সম্ভব হবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে বিচারকদের সম্পদের বিবরণী দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বিচারিক আদালতের বিচারকদের জন্য আধুনিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও আদালত কর্মী নিয়োগে কেন্দ্রীয় নিয়োগ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে বক্তারা বিচার ব্যবস্থার সংস্কারের নানা দিক তুলে ধরেন। বিশেষ করে আইনি সহায়তা, রাষ্ট্রপক্ষের কার্যক্রম, আন্তর্জাতিক মান ও প্রমাণভিত্তিক চর্চা নিয়ে আলোচনা হয়।
আরএম