চাঁদপুরসহ অন্য জেলায় ধরা পড়া ইলিশের মূল্য নির্ধারণের বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিলেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। সেই চিঠির আলোকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জুন মাসে বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করে এবং মূল্য নির্ধারণের প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টা অনুমোদন করেন।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাতে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
জানা যায়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সংযোগ শাখার স্মারকে গত ২৬ জুন এ সংক্রান্ত চিঠি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক চাঁদপুর ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের একান্ত সচিব বরাবর পাঠান করেন জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মু. মাহমুদ উল্লাহ মারুফ।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, কমিশনারদের কাছ থেকে প্রাপ্ত জুন ২০২৫-এর প্রথম পক্ষের পাক্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নিম্নোক্ত প্রস্তাবটি প্রধান উপদেষ্টার সমীপে উপস্থাপন করা হয়।
প্রস্তাবে বলা হয়, চাঁদপুরের ইলিশের সুস্বাদুতার সুযোগ নিয়ে চাঁদপুর ও আশপাশের জেলার কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ও আড়তদার নিজের ইচ্ছেমতো দাম হাঁকাচ্ছেন, যা একেবারেই ক্রেতার নাগালের বাইরে। ইলিশের চড়া মূল্যের কারণে ইলিশ জনসাধারণের ক্রয়সীমার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। যেহেতু ইলিশ চাঁদপুরসহ অন্যান্য জেলাতেও ধরা পড়ে সেহেতু কেবল জেলা প্রশাসন, চাঁদপুর কর্তৃক ইলিশের মূল্য নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হলে এর ফলপ্রসূ প্রভাব পড়বে না।
চাঁদপুরের পাশাপাশি বরিশাল, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠিসহ আরও অনেক সাগর তীরবর্তী জেলায় ইলিশ ধরা পড়ে থাকে। নদী বা সাগরে ইলিশ উৎপাদনে জেলেদের কোনো উৎপাদন খরচ না থাকলেও ধৃত ইলিশের দাম অসাধু ব্যবসায়ী কিংবা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।
যেহেতু ইলিশ প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদন হয় সেহেতু ইলিশ আহরণ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে ইলিশের মূল্য নির্ধারণ প্রয়োজন। ইলিশের মূল্য নির্ধারণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে সদয় নির্দেশনা প্রদান করা যেতে পারে।
প্রস্তাবটি প্রধান উপদেষ্টা অনুমোদন করেছেন উল্লেখ করে প্রস্তাবের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক বাস্তবায়ন অগ্রগতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মহসীন উদ্দিন বলেন, চাঁদপুরসহ দেশের ১০ থেকে ১২ জেলায় ইলিশ ধরা পড়ে এবং ক্রয়-বিক্রয় হয়। আমরা মনে করছি চাঁদপুরে অংশীজনদের নিয়ে ইলিশের দাম নির্ধারণ করে দিই, তখন এই ইলিশ অন্য জেলায় গিয়ে বিক্রি হবে। এরই ভিত্তিতে আমি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছি। ইলিশের বাজার মূল্য যাতে করে সিন্ডিকেটের খপ্পরে না পড়ে এবং উচ্চমূল্য না হয়।
পিএ/টিএ