জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর মেহেদী হাসান জুয়েলকে ঘিরে আওয়ামী ট্যাগ দিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল ও প্রক্টর অফিস।
‘আ. লীগের জুয়েল এখন বিএনপি নেতা’ শিরোনামে গত ২৮ জুন একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সাদা দলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দীন স্বাক্ষরিত আলাদা দুটি বিবৃতি দেওয়া হয়।
সাদা দলের বিবৃতিতে বলা হয়, সহকারী প্রক্টর মাহাদী হাসান জুয়েল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন একটি সংবাদ আমাদের নজরে আসে। এ সংবাদটি সম্পূর্ণ একটি মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
মাহাদী হাসান জুয়েল সম্পর্কে প্রকাশিত ও প্রচারিত তথ্যগুলো রাজনৈতিকভাবে বিভ্রান্তিকর এবং সাদা দলের ভাবমূর্তি নীতি ও আদর্শকে প্রশ্নবিদ্ধ করার একটি হীন প্রচেষ্টা। বিশেষ করে তাকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত কিংবা অতীতে তিনি ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এমন দাবি সম্পূর্ণ অসত্য, মনগড়া এবং প্রমাণবিহীন।
মাহাদী হাসান জুয়েল একজন মেধাবী, যোগ্য ও নির্ভরযোগ্য শিক্ষক। তার সহকারী প্রক্টর পদে মনোনয়ন জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী সাদা দলের সুপারিশে এবং তার পেশাগত যোগ্যতা ও প্রশাসনিক দক্ষতার ভিত্তিতে হয়েছে। জানামতে তিনি কখনোই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।
একটি দায়িত্বশীল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রশাসনিক পদে থাকা একজন ব্যক্তিকে এভাবে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার চেষ্টা স্বাধীন মতপ্রকাশের প্রতি চরম অবজ্ঞার বহিঃপ্রকাশ। তাই আমরা এ ধরনের উদ্দেশ্য প্রণোদিত অপপ্রচার ও রাজনৈতিক চরিত্র হননের প্রচেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত সহকারী প্রক্টর ও মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহাদী হাসান জুয়েল সম্পর্কে মনগড়া, বিভ্রান্তিকর, অন্তঃসারশূন্য, একপাক্ষিক এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, যা শুধু নিন্দনীয় নয়-গভীরভাবে ষড়যন্ত্রমূলক ও মানহানিকর।
তিনি আরও বলেন, একজন শিক্ষক ও প্রশাসনিক দায়িত্বশীল ব্যক্তি সম্পর্কে বিকৃত তথ্য পরিবেশন এবং অতীতের সামাজিক প্রোগ্রামের ছবি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সাজিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা সাংবাদিকতার ন্যূনতম নীতিমালার লঙ্ঘন। গণমাধ্যমের এমন দায়িত্বহীনতা আমাদের বিস্মিত করেছে। মাহাদী হাসান জুয়েল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াকালীন সময়ে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন না। জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও সব ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তাছাড়াও তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী আদর্শে উদ্বুদ্ধ শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের সক্রিয় সদস্য। ফলে তার বিরুদ্ধে অসত্য সংবাদ প্রকাশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সহকারী প্রক্টর মেহেদী হাসান জুয়েল বলেন, আমি কখনোই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না। আমাকে নিয়ে ভোলার স্থানীয় একটি গোষ্ঠী মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। তার কারণ ভোলার বেগম রহিমা কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি পদ। কিছুদিন আগেও এই গোষ্ঠীটি আমার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে আমাকে বিব্রত করার চেষ্টা করেছে। তারাই এখন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের দিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। ছাত্রজীবন থেকেই আমি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলাম এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার পর বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সর্বশেষ সাদা দলের ফোরাম থেকে সবার সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমাকে সহকারী প্রক্টরের জন্য সুপারিশ করা হয়।
এফপি/এসএন