জুলাইয়ের যুদ্ধ চালিয়ে যাব পার্লামেন্ট পর্যন্ত: সামান্তা শারমিন

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেছেন, আমরা যুদ্ধ করেছি মাঠে, খালি হাতে পুলিশের বুলেটের সামনে লড়েছি। এবার এই যুদ্ধ চালিয়ে যাব পার্লামেন্ট পর্যন্ত।

শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেলে ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলা চত্বরে আয়োজিত এক গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা একটি গণ-অভ্যুত্থান সংগঠিত করেছি। কিন্তু উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় এখনো অনেক সমস্যা রয়ে গেছে, যেগুলো আমরা এখনো দূর করতে পারিনি। কারণ এই রাষ্ট্র কাঠামো ফ্যাসিস্ট। এই কাঠামো ভাঙতেই হবে, আর এই দায়িত্ব নিয়েছে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ ও তরুণ প্রজন্ম।

পীরগঞ্জবাসীর উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন তোলেন, আপনারা কি দেখছেন না—এলাকায় চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস আর দখলদারিত্ব চলছে? এই অন্যায় বন্ধ করতে পারে একমাত্র ছাত্র-জনতা ও এনসিপি। আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলব—এ শহরের কোনো কোণায় চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, সন্ত্রাস চলতে দেব না।

সামান্তা শারমিন জনগণের প্রতি জবাবদিহিতার অঙ্গীকার করে বলেন, আপনারা সাক্ষী থাকবেন—আমরা আপনাদের ওয়াদা ভাঙব না। যদি ভাঙি, আপনারা আমাদের মসনদ থেকে নামিয়ে দেবেন। আমরা তরুণরা আপনাদের সামনে দাঁড়িয়েছি, দোয়া করবেন, পাশে থাকবেন, এবং আমাদের জবাবদিহির আওতায় রাখবেন।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের দুরবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি জেলা সদরের হাসপাতাল এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এই খাতের মানোন্নয়ন না হলে কীভাবে এমন জনগোষ্ঠী তৈরি হবে, যারা ভবিষ্যতে ভারতের মতো শক্তিশালী রাষ্ট্রের সঙ্গে লড়াইয়ে প্রস্তুত হবে?

তিনি জনগণকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা সবাই আমাদের সহযোদ্ধা, রক্ষক ও অঙ্গীকারকারী। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি, আপনারাও আমাদের সঙ্গে থাকবেন ইনশাআল্লাহ।

সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে এনসিপি নেত্রী বলেন, আমাদের লড়াই বহুদলীয় রাষ্ট্র কাঠামো পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত চলবে। শান্তি নেই আমাদের, রাজপথে থাকব, রাজপথ থাকবে এনসিপি ও ছাত্র-জনতার দখলে।

বক্তব্যের শেষ দিকে তিনি দেশের জনগণের ধর্মীয় ও সামাজিক দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে বলেন, আমাদের দেশের ৯৬ থেকে ৯৮ শতাংশ জনগণ মুসলিম। আমাদের দায়িত্ব আছে—দেশের একটি মানুষও যদি অভাবে বা অশান্তিতে থাকে, তাকে শান্তিতে না রাখা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না।

সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনীম জারা, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

এমআর 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
‘দ্য ট্রেইটার্স ইন্ডিয়া’র মঞ্চে উরফি জাভেদ ও নিকিতার জয় Jul 05, 2025
img
আগে পিওনের ৪০০ কোটি টাকা বানাতে লেগেছে ১৫ বছর কিন্তু এখন লাগে ৩ মাস : রুমিন ফারহানা Jul 05, 2025
img
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তরুণরা নতুন সমাজ গড়বে : সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা Jul 05, 2025
img
ক্লাব বিশ্বকাপে আল হিলালকে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করল ব্রাজিলের ফ্লুমিনেন্স Jul 05, 2025
img
‘বাবা আমাকে সাহায্য করেনি’, অভিনয় জীবন নিয়ে মিঠুন পুত্রের আক্ষেপ Jul 05, 2025
img
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল সোনার দাম Jul 05, 2025
img
হজ শেষে দেশে ফিরলেন ৬৫ হাজার ৫৭৩ হাজি Jul 05, 2025
img
‘আমি পাঁচ বছরের মধ্যে বিয়ে করে মা হতে চাই’, জায়েদ খানকে তিশা Jul 05, 2025
img
রোমে পেট্রোল স্টেশনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, আহত ৪৫ Jul 05, 2025
img
চট্টগ্রামে তাজিয়া মিছিলে আতশবাজি-অস্ত্র নিষিদ্ধ করল সিএমপি Jul 05, 2025
img
উড্ডয়নের আগেই অসুস্থ হয়ে লুটিয়ে পড়লেন এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলট Jul 05, 2025
img
আমরা যেনতেন নির্বাচন চাই না : জামায়াত আমির Jul 05, 2025
img
এ কে আজাদের বাসভবনে হামলা, ফরিদপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা Jul 05, 2025
img
গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা Jul 05, 2025
img
৩৬ জুলাই শহীদ হওয়ার খুব কাছাকাছি ছিলাম, সুযোগ এলে পিছপা হবো না: আসিফ Jul 05, 2025
img
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এক দিনে নিহত আরও ১৩৮ Jul 05, 2025
img
দেশের ৪ বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস Jul 05, 2025
img
আজ মেঘলা থাকবে ঢাকার আকাশ, হতে পারে বৃষ্টি Jul 05, 2025
img
মহিলা দল নেত্রীকে মারধরের অভিযোগে বিএনপি নেতা বহিষ্কৃত Jul 05, 2025
img
একদিন পরই আইনে পরিণত হলো ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ Jul 05, 2025