ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনেইরোতে চলছে ব্রিকস জোটের সম্মেলনে। উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোকে নিয়ে গঠিত হওয়া এই জোটের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তিনি ব্রিকস জোটের সঙ্গে যুক্ত বা তাদের ‘যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী নীতির’ প্রতি সমর্থন জানানো যেকোনো দেশের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সোমবার (৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, ব্রিকস জোটের সঙ্গে যুক্ত বা তাদের ‘যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী নীতির’ প্রতি সমর্থন জানানো যেকোনো দেশকে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে বলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন। তার এই ঘোষণা এমন এক সময়ে এসেছে যখন ব্রাজিলে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয়েছে।
রোববার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন: “যেকোনো দেশ যদি ব্রিকস-এর যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী নীতির সঙ্গে নিজেকে জড়ায়, তবে তাদের অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। এই নীতিতে কোনো ব্যতিক্রম থাকবে না। ধন্যবাদ!”
তবে তিনি ওই ‘যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী নীতি’র বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি।
রিও ডি জেনেইরোতে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা বলেন, “ব্রিকস এখন একবিংশ শতাব্দীর নতুন বৈশ্বিক বাস্তবতার প্রতিফলন। আমরা এখন এমন এক সময়ে এসেছি, যেখানে বহুপাক্ষিকতা চ্যালেঞ্জের মুখে।”
তিনি জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন বা ন্যামের সঙ্গেও ব্রিকসের তুলনা করেছেন। ন্যাম মূলত স্নায়ু যুদ্ধকালীন একটি জোট, যেটি তৎকালীন দুই পরাশক্তির মধ্যে কোনো পক্ষই নেয়নি।
এদিকে রোববার দুপুরে দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে ব্রিকস নেতারা ট্রাম্পের শুল্কনীতির প্রতি পরোক্ষভাবে সমালোচনা করেন। তারা বলেন, “শুল্ক বাড়ানোর প্রবণতা বৈশ্বিক বাণিজ্যের জন্য হুমকি।”
এবারের সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা এবং আরও অনেক বিশ্বনেতা উপস্থিত থাকলেও, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানার কারণে অনলাইনে অংশ নিচ্ছেন।
২০০৯ সালে যাত্রা শুরু করা ব্রিকস-এর সদস্য ছিল: ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং পরে দক্ষিণ আফ্রিকা। এখন এর নতুন সদস্য হিসেবে যোগ হয়েছে: মিসর, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এবারের সম্মেলনে প্রথমবার অংশ নিচ্ছে ইন্দোনেশিয়া।
বর্তমানে ব্রিকস বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক এবং বৈশ্বিক উৎপাদনের ৪০ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করছে। ব্রিকস নেতারা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের মতো বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।
তারা বলেন, “যদি বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থা বর্তমান বাস্তবতা প্রতিফলিত না করে, তবে ব্রিকসের উচিত এটি আধুনিক করে তোলা।”
এমআর/টিকে