নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। তিনজনের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান এবং সাবেক আইজিপি মামুন তিনজন এই মামলার আসামি। এই চার্জ গঠন যতটা আলোচনার বিষয় হয়েছে, তার চেয়ে বেশি আলোচনার বিষয় হয়েছে সাবেক আইজিপি মামুন এখানে রাজসাক্ষী হতে যাচ্ছেন। এখন এই রাজসাক্ষী হওয়াটা এই মামলার জন্য কতটা ভালো, কতটা সুবিধা দেবে?
 
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার বিচারের জন্য তাকে অভিযুক্ত করার জন্য যথেষ্টের বেশি খুবই অবজেক্টিভ তথ্য-প্রমাণ আছে।
শেখ হাসিনা যে লিথাল ওয়েপান দিয়ে গুলি করার নির্দেশ দিয়েছেন, সেটার অডিও আছে এবং সেটা ভেরিফায়েড হয়েছে। আমাদের চিফ প্রসিকিউটরের কাছে আরো অনেক এ রকম ডেটা ক্লিপিং আছে। সেগুলোই অনেক অনেক বেশি অকাট্য প্রমাণ হিসেবে আমাদের সামনে থাকবে। সাক্ষ্য লাগবে না তা না।
কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, আসলে সাক্ষ্যের চেয়ে ওগুলো ডিজিটাল সাক্ষ্য এক ধরনের সাক্ষ্য। এই প্রমাণগুলো অনেক অনেক বেশি অথেনটিক হবে।’
‘এখন মামুন রাজসাক্ষী হওয়ার ব্যাপারটাকে আমরা কিভাবে দেখব। রাজসাক্ষীর সাক্ষী আসলে এক অর্থে খুব শক্তিশালী না এবং আইনেই বলা আছে যে রাজসাক্ষীর সাক্ষ্যের ওপরে ভিত্তি করে কাউকে শাস্তি দেওয়া যাবে না।
কারণ, সাধারণ সাক্ষীর চাইতে আসলে রাজসাক্ষীর যে সাক্ষ্য সেটা আসলে খুব শক্তিশালী না। আমরা অনেকে সম্ভবত ভুলভাবে মনে করছি যে এটা একটা বিরাট কিছু হয়ে গেল।’
জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘মামুনকে শেখ হাসিনার সময়ের মতো চাপ প্রয়োগ করে, বল প্রয়োগ করে, অত্যাচার করে এটাতে রাজি করানো হয়েছে আমি মনে করি না। কিন্তু এই অভিযোগগুলো আসবে, কারণ বাংলাদেশের ট্র্যাডিশনটা এ রকমই। সুতরাং কাস্টডিতে থাকা একজন যখন বলছেন এবং তার অপরাধের শাস্তি থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন কিংবা শাস্তি অনেক কমে যাবে এ রকম একটা শর্ত থাকে; তাই এটা আসলে খুব বড় বিষয় না।
কারণ তিনি রাজসাক্ষী হলে অন্যদের চেয়ে ভালো থাকতে পারবেন। তিনি নিজের পক্ষে অপরাধ কমাতে পারবেন।’
‘কেউ কেউ এটা নিয়ে উচ্ছ্বাস দেখাচ্ছেন যে অপরাধীরা স্বীকারোক্তি দিচ্ছে। তবে শেখ হাসিনার বিচার করার জন্য রাজসাক্ষীর চেয়ে হাজার গুণ শক্তিশালী তথ্য-প্রমাণ আমাদের হাতে আছে।
 সেই তথ্য-প্রমাণই আসলে শেখ হাসিনাকে অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত করবে এবং এগুলোই বেশি জরুরি। এ ছাড়া জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের যে রিপোর্ট, সেটাও যথেষ্ট বড় প্রমাণ। এগুলো দিয়েই আসলে চেষ্টা করা উচিত শেখ হাসিনার বিচার করা এবং সেটি অনেক বেশি শক্তিশালী হবে।
এফপি/এস এন