সংঘাতের ১২ দিনে ইরানের ক্রমাগত ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় ইসরায়েলের। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় সামরিক ও বেসামরিক বহু স্থাপনা। এবার শোনা যাচ্ছে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টারের নতুন নতুন ভবন তৈরি করে দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সরকারি নথি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইসরায়েলি পত্রিকা হারেৎজ জানিয়েছে, বর্তমানে যে প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, তাতে খরচ হচ্ছে ২৫ কোটি ডলারের বেশি। তবে ভবিষ্যতে তা ১০০ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে। এই কার্যক্রম আরও আগেই শুরুর কথা ছিল। কিন্তু ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের কারণে তা পিছিয়ে যায়।
পুরো কর্মযজ্ঞের দায়িত্বে রয়েছে মার্কিন সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর। তারা ঠিকাদারদের মাধ্যমে ইসরায়েলি সামরিক ঘাঁটিতে গোলাবারুদের গুদাম এবং যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার রিফুয়েলিংয়ের ফ্যাসিলিটিসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করছে।
এয়ার ফিল্ডসহ বিল্ডিং মেইনটেন্যান্স রিপেয়ারের জন্যও ঠিকাদার খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র। ভবিষ্যতে ইসরায়েলকে যে বোয়িং কেসি-ফোর্টি সিক্স ট্যাংকার দেবে যুক্তরাষ্ট্র, তার জন্য হ্যাঙ্গার, মেইনটেন্যান্স ও স্টোরেজ রুম তৈরির খরচ ধরা হয়েছে ১০ কোটি ডলারেরও বেশি। সিএইচ-ফিফটিথ্রিকে হেলিকপ্টার রাখার আরেক প্রজেক্টের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫ কোটি ডলার।
গাজা উপত্যকার খান ইউনিসে ভয়াবহ এক বিস্ফোরণে ইসরায়েলি সেনাদের ওপর ভবন ধসে পড়লে কমপক্ষে এক সেনা নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের মধ্যে একজন নারী প্যারামেডিক গুরুতর অবস্থায় রয়েছেন।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, বিস্ফোরণের পরপরই ঘটনাস্থলে গোলাগুলি শুরু হয় এবং ইসরায়েলি সেনারা হামলার মুখে পড়ে। আহত সেনাদের সরিয়ে নিতে হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়।
এ হামলা চলমান গাজা যুদ্ধের সাম্প্রতিক সহিংসতার মাত্রাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ইসরায়েলি দৈনিক ‘ইয়েদিয়োথ আহারনোথ’ জানায়, গত জুন মাস ছিল চলতি বছরের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সময়। এতে ২০ ইসরায়েলি সেনা ও কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৫ জনই মারা গেছেন গাজার দক্ষিণাঞ্চলে হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে তীব্র সংঘর্ষে।
এদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ইয়েমেনের এলাকা থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করা হয়েছে। তবে এটি কোথায় আঘাত হেনেছে বা ক্ষয়ক্ষতি কী হয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
অন্যদিকে এ সহিংসতা চলাকালেও যুদ্ধ বন্ধের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার হয়েছে। হামাস কাতারের রাজধানী দোহায় চলমান আলোচনার প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেছে, তারা শান্তিপূর্ণ সমাধানে আগ্রহী। ইসরায়েলের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, এক বা দুই সপ্তাহের মধ্যে হামাসের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি বাস্তবায়ন হতে পারে।
তবে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেনগভির প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে আলোচনায় ইতি টেনে আরও কঠোর সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বিপরীতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডেওন সা'আর নেতানিয়াহুর কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিয়ে বলেছেন, রাজনৈতিক চাপ উপেক্ষা করে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে হবে।
এমকে/টিকে