গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে মিটফোর্ডের সামনে জনসম্মুখে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণহীনতার বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
শনিবার (১২ জুলাই) রাজধানীর ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের মেজর হায়দার মিলনায়তনে দলের জাতীয় পরিষদের বর্ধিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি।
মিটফোর্ডের ঘটনা প্রসঙ্গে জোনায়েদ সাকি বলেন, জনসম্মুখে পাথর দিয়ে মানুষ হত্যা সরকারের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণহীনতার বহিঃপ্রকাশ। চাঁদাবাজি ও বখরাবাজির কাঠামোকে অবিকল বহাল রেখে এই কাঠামোকে কেন্দ্র করে চলা সন্ত্রাসী কার্যক্রম থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, জনগণ এই আতঙ্ক তৈরির রাজনীতিকে আবার প্রতিষ্ঠিত করার জন্য একটা অভ্যুত্থান ঘটায়নি। এ রকম কোনো ধরনের কর্মকাণ্ডকে জনগণ আর বরদাশত করবে না। যারা এই ধরনের কাজকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন ও সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিচ্ছেন, তাদেরকে অবশ্যই এই রাজনীতি ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে হবে, অন্যথায় মানুষ জবাব দিয়ে দেবে। জোনায়েদ সাকি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণঅভ্যুত্থানের সমর্থন থেকে তৈরি হয়েছে। গত দশ মাসে আমরা বারবার আহবান জানানো সত্ত্বেও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করার কোনো জোরালো উদ্যোগ আমরা দেখছি না। বরং দেখা যাচ্ছে, মব আক্রমণের মতো গণবিরোধী কর্মকাণ্ডকে তথাকথিত প্রেসার গ্রুপ বলে এক ধরনের বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় মসজিদে ঢুকে ইমামকে কোপানোর ঘটনাতেও সমর্থন দিচ্ছে চিহ্নিত মব সন্ত্রাসীরা।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পুলিশ সংস্কারের উদ্যোগকে কার্যত ধামাচাপা দিয়ে ফেলে রেখেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে পুলিশ সংস্কারের কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়া মানে এই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা।
সীমান্তে একের পর এক নৃশংসভাবে মানুষ হত্যার দায়ে জাতিসংঘের অধীনে ভারতকে বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানান গণসংহতি আন্দোলনের এই প্রধান সমন্বয়কারী।
গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, অবিলম্বে প্রত্যেকটি ঘটনার তদন্তসাপেক্ষে বিচার করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্পষ্টভাবে যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। জনগণের মনে আতঙ্ক তৈরির রাজনীতি এই বাংলাদেশে আর চলবে না। যারা মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন, তাদেরকে তাদের প্রাপ্য বুঝিয়ে দিতেও জনগণ পিছপা হবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের নেতা তাসলিমা আখতার, মনির উদ্দীন পাপ্পু, হাসান মারুফ রুমী, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট মুরাদ মোর্শেদ, বাচ্চু ভূঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, তরিকুল সুজন, কেন্দ্রীয় সদস্য অঞ্জন দাস, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য নাজার আহমেদ, কেরামত আলীসহ দলের বিভিন্ন অঞ্চল ও শাখার নেতৃবৃন্দ।
ইউটি/টিএ