দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের যুদ্ধবিরতি আলোচনা থমকে গেছে। হামাসের কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বর্তমান আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
ফিলিস্তিনি আলোচনাকারীদের একটি সূত্র রোববার (১৩ জুলাই) জানিয়েছেন, তিন চারটি বিষয় নিয়ে এখনো কোনো সমাধানে পৌঁছানো যায়নি।
যারমধ্যে যুদ্ধবিরতির চলার সময় ইসরায়েলি সেনাদের গাজা থেকে সরে যাওয়া এবং ত্রাণ বিতরণ বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে বেশি ঝামেলা চলছে।
যুদ্ধবিরতি হলেও দখলদাররা গাজার রাফাতে তাদের সেনাদের রাখতে চায়। এছাড়া কথিত বাফার জোনের দোহাই দিয়ে গাজার তিনদিকের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বিশাল অংশে নিজেদের সেনা রাখতে চায় তারা।
সেনাদের প্রত্যাহার এবং ত্রাণ সহায়তা বিতরণ নিয়ে কোনো সমাধানে পৌঁছাতে না পারায় যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েল-হামাসকে ফিলিস্তিনি বন্দিদের তালিকা নিয়ে কাজ করতে বলেছে। যাদের যুদ্ধবিরতির সময় মুক্তি দেওয়া হবে।
তবে হামাস এতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ফিলিস্তিনি এক কর্মকর্তা বলেছেন, “আলোচনা ভেস্তে গেলে হামাসের ওপর দোষ চাপাতে এই পরিকল্পনা করা হয়েছে।”
দখলদার ইসরায়েল যদি কথিত বাফার জোনে তাদের সেনাদের রাখে তাহলে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি যুদ্ধবিরতির পরও তাদের নিজ বাড়িতে ফিরে যেতে পারবেন না। যা হামাস কোনোভাবেই মেনে নেবে না।
দখলদার ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আগামী সপ্তাহে ‘সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ’ ঘোষণা করবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২০টিরও বেশি দেশ। কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোতাতে আগামী ১৫ থেকে ১৬ জুলাই ‘জরুরি সম্মেলন’ হবে। সেখানেই দখলদারদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ ঘোষণা করা হবে।
এটির আয়োজক ‘দ্য হেগ গ্রুপ’। সহ-আয়োজক কলম্বিয়ার সরকার। ‘দ্য হেগ গ্রুপ’-এর সহ-সভাপতি হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ইসরায়েলের মানবতা বিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক ও আইনি সহায়তা করবে।
দক্ষিণ আফ্রিকার আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক মন্ত্রী রোল্যান্ড লামোলা জানিয়েছেন, এই সম্মেলনে বার্তা দেওয়া হবে কোনো দেশ আইনের ঊর্ধ্বে নয় এবং কোনো অপরাধ জবাবদিহিতার বাইরে থাকবে না।
‘দ্য হেগ গ্রুপে’ প্রতিষ্ঠাকালীন দেশ হলো বলিভিয়া, কলম্বিয়া, কিউবা, হন্ডুরাস, মালয়েশিয়া, নামিবিয়া, সেনেগাল এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের সঙ্গে এই সম্মেলনে যোগ দেবে আলজেরিয়া, বাংলাদেশ, ব্রাজিল, চিলি, চীন, জিবুতি, হন্ডুরাস, ইন্দোনেশিয়া, আয়ারল্যান্ড, লেবানন, নিকারাগুয়া, ওমান, পর্তুগাল, স্পেন, কাতার, তুরস্ক, সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইনস, উরুগুয়ে এবং ফিলিস্তিন।
এছাড়া জাতিসংঘের ফিলিস্তিন বিষয়ক বিশেষ কর্মকর্তা ফ্রান্সেসকা আলবানিস, ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা ফিলিপে লাজ্জারিনি, জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষ কর্মকর্তা ত্লালেং মোফোকেংসহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এ সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন বলে গতকাল শনিবার (১২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে জানায় সংবাদমাধ্যম দ্য মিডেল ইস্ট আই।
সূত্র: মিডেল ইস্ট আই
এসএন