কোটা ব্যবস্থাকে সংবিধানবিরোধী ও মেধার প্রতি অন্যায় বলে অভিহিত করেছেন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি কোটা বাতিলের পক্ষে সজাগ থাকার পাশাপাশি আন্দোলনের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। রবিবার (১৩ জুলাই) রাতে তিনি তার ফেসবুক পোস্টে কোটা নিয়ে তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।
আসিফ নজরুলের তার ফেসবুকে লিখেন—২০১০ সালের ঘটনা।
২৮তম বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। প্রচন্ড মন খারাপ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রছাত্রী আমার বাসায় আসেন। সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থার কারণে সুযোগ পানানি এই মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা। তাদের সাথে কথা বলার কিছুদিন পর কোটা নিয়ে আমার প্রথম কলাম লিখি ২৫ জুন ২০১০ সালে।
তিনি আরো লিখেন, এই লেখার আগে শ্রদ্ধেয় একজন আইনজীবীর সঙ্গে এ বিষয়ে একটা মতৈক্য হয়। কোটা নিয়ে আমি লিখব, এরপর বিদ্যমান কোটাব্যবস্থার কিছু অংশ সংবিধানবিরোধী—এই যুক্তিতে তিনি তা বাতিলের জন্য হাইকোর্টে মামলা করবেন, মোটামুটি এই স্থির করি আমরা। আমার লেখা ছাপা হলো, অনলাইনে বিপুলসংখ্যক পাঠকের সমর্থনও পাওয়া গেল।
কিন্তু এরপর আর শ্রদ্ধেয় আইনজীবী মামলা করতে রাজি হন না। তিনি সমাজে খুব প্রগতিশীল হিসেবে পরিচিত। তারপরও মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংবিধানবিরোধী, এটি বললে তাঁকে জামায়াত-শিবির ভাবা হতে পারে, এই ভয় গ্রাস করে তাকে। তার ভয় ভুল ছিল না। কোটা বাতিলের দাবীতে ২০১৩ সালে যে আন্দোলন হয় তাদের আখ্যায়িত করা হয় জামায়াত-শিবির হিসেবে।
এর প্রতিবাদ করে ২০১৩ সালে ১৪ জুলাই লিখি ‘কোটা বনাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’। এরপর ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কোটা ব্যবস্থার নির্মমতা নিয়ে বহু লেখা লিখেছি। আলোচনা, বিবৃতি এবং রাস্তায় সক্রিয় থেকেছি। এই কোটা আন্দোলন থেকেই আওয়ামী লীগের ফ্যাসিষ্ট শাসনের অবসান ঘটে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আত্মদানকারী ছাত্র-জনতার অবিনশ্বর অবদানের সাথে সাথে এই সময়ে স্বরণ করি এই আন্দোলনের সূচনালগ্নের তরুণদের।
আরআর