গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা। গত বছর আত্মপ্রকাশের পর থেকে এই প্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মিছিল করল সংগঠনটি।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে ভিসি চত্বর প্রদক্ষিণ করে টিএসসির সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিলে শিবির নেতাকর্মীরা ‘বাঁশের লাঠি তৈরি করো, গোপালগঞ্জ স্বাধীন করো’, ‘লীগ ধর, জেলে ভর’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, এবং ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। বিক্ষোভ-পরবর্তী সমাবেশে সংগঠনটির ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি আসিফ আব্দুল্লাহ গোপালগঞ্জকে ‘একখণ্ড ছোট্ট দিল্লি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, ‘বাংলাদেশের সব আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা গোপালগঞ্জে আশ্রয় নিয়েছে এবং আওয়ামী লীগ এই জেলাকে নিজেদের সন্ত্রাসীদের ক্যান্টনমেন্টে পরিণত করেছে।’
আসিফ আব্দুল্লাহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি অবিলম্বে গোপালগঞ্জের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে গোপালগঞ্জে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ববিরোধী অপতৎপরতায় লিপ্তদের বিরুদ্ধে সারা দেশের ছাত্রজনতাকে নিয়ে মার্চ করতে বাধ্য হবেন।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েম বলেন, হাসিনা ও তার দোসরদের গোপালগঞ্জে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে এবং স্বাধীন বাংলাদেশে তাদের কোনো জায়গা হবে না। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলেন, যদি তারা বিচার করতে না পারেন, তাহলে যেন পদত্যাগ করেন, কারণ ছাত্র-জনতা দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, বর্তমান সরকার জুলাই মাসের রক্তের ওপর ক্ষমতায় বসেছে এবং তারা যদি জুলাইয়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে, তবে তাদের পরিণতি খুনি হাসিনার চেয়েও খারাপ হবে। কায়েম অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে শহীদদের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে নতুন বাংলাদেশের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে এবং খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার অনুরোধ জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ তার বক্তব্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, ‘সারা দেশ থেকে যখন আওয়ামী লীগের ৩০০ এমপি পালিয়ে যায়, তখন গোপালগঞ্জের গুটিকয়েকজনের লাফালাফি দেখে হাসি পায়, আবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থতা দেখে দুঃখ হয়।’
তিনি অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতিটি প্রশাসন চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। যদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তবে তারা যেন দায়িত্ব ছেড়ে দেন; কারণ বাংলাদেশে অসংখ্য তরুণ-যুবক দেশ শাসনের জন্য প্রস্তুত।
তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের ক্যান্টনমেন্ট হিসেবে পরিচিত গোপালগঞ্জে আশ্রিত সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে এবং এক্ষেত্রেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
ইউটি/টিএ